বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে নয়, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিএনপিতে আসার অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার রাজধানীর শেরে বাংলানগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই দাবি করেন।
অনেকে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে আসার জন্য যোগযোগ করছেন- তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি থেকে নয়, এখন আওয়ামী লীগ থেকে আমাদের এখানে আসার অবস্থা তৈরি হয়েছে।’
সম্প্রতি বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং একজন ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপির দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। আরও কয়েকজন পদত্যাগ করতে পারেন এমন গুঞ্জন আছে।
বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পদত্যাগের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র নেতা পদত্যাগ করেছেন, এটা আপনাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। এর আগে আমি জানতাম না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে তারা দেশের মানুষের অধিকার হরণ করেছে। গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য তারা কাজ করছে।’
‘দলে বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য নেতারা চলে যাচ্ছেন। কারণ বাইরে থেকে তারেক রহমান দল চালাতে পারছেন না’- সরকার দলীয় নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘এ কথা বলে ওনারা অভ্যস্ত। কারণ তারা নিজেদের দল সামলাতে পারছেন না। প্রতিদিন যুবলীগের সম্মেলন ঘিরে পরস্পর মারামারি করছেন। নিজেদের পতন ঢেকে রাখার জন্য তারা অহেতুক মিথ্যা কথা বলছেন।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলন আরও বেগবান হবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল ।
সম্প্রতি শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় স্বাধীনতার যে চেতনা নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, পরবর্তীকালে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম, সেই স্বৈরাচারকে সঙ্গে নিয়ে তারা সরকার গঠন করেছিল। পরবর্তী সময়ে ভোট ডাকাতি করে তাদের নিয়ে সংসদে গেছে। তাদেরই মহাসচিব কয়েকদিন আগে গণতন্ত্রকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে আক্রমণ করেছেন।’
ফখরুল বলেন, ‘তিনি (রাঙ্গা) আমাদের প্রিয় নূর হোসেন, যিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক ছিলেন, তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, যে কথা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে পুরোপুরি অপমান করা, দেশের গণতান্ত্রিক মানুষকে অপমান করা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। আমরা মনে করি প্রকাশ্যে, সংসদে সব জায়গায় তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মো. নেসারুল হক প্রমুখ।