‘সরকারি কর্মচারীসহ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে’

সংসদ প্রতিবেদক

সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

‘সব দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনতে দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে রাজনৈতিক ব্যক্তি ছাড়া সরকারি কর্মচারীসহ অন্য যেসব ব্যক্তি জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে’-বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির এমপি মো. মুজিবুল হকের তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

দুর্নীতিবিরোধী তার সরকারের নেয়া সব পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত করে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ক্যাসিনো, জুয়া, মাদক, দুর্নীতিসহ সব ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’

‘সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে ক্যাসিনো, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮, অস্ত্র আইন-১৮৭৮, বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪সহ অন্যান্য প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ক্যাসিনো ও দুর্নীতির সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ যাতে কেউ করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে’।

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অর্থাৎ দুর্নীতি অনুসন্ধানে তদন্ত এবং প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ বছরে দুর্নীতি দমন কমিশন ১৩ হাজার ২৩৮টি অভিযোগের অনুসন্ধান, ৩ হাজার ৬১৭টি মামলা রুজু এবং ৫ হাজার ১৭৯ টি চার্জশিট দালিখ করেছে।

তিনি আরও বলেন, তাৎক্ষণিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনার জন্য দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট সদা তৎপর রয়েছে। এই ইউনিট প্রতিনিয়ত ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সারাদেশে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন দফতরে তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করছে। এ ছাড়া আসামি গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। ২০১৯ সালে এ পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন ১৬টি ফাঁদ মামলা দায়ের করেছে। ৬৮ জন আসামি গ্রেফতার করেছে। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তির সম্পদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন দফতরে পত্রপ্রেরণ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে দুর্নীতি দমন কমিশন সর্বদা বদ্ধপরিকর। তাছাড়া বাংলাদেশের কোন কোন ব্যক্তি সিঙ্গাপুরে ক্যাসিনো খেলেছে সে সম্পর্কিত তথ্য পাঠানোর জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন সিঙ্গাপুর সরকারকে অনুরোধ করেছে।

রওশন আরা মান্নানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি একটি বহুমাত্রিক ব্যাধি। দুর্নীতি যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নয়ন এমনকি রাজনৈতিক পরিবেশের প্রধান অন্তরায়। দুর্নীতি গণতন্ত্রের ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করে। তাই দুর্নীতি দমনে বর্তমান সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল। উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ উচ্চ আয়ের দেশ হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে