অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুয়ায়ী রাজস্ব পেতে করহার কমিয়ে (ট্যাক্স রেট) কর আহরণের আওতা বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি আমরা ট্যাক্সের রেট কমাবো। তবে করের আওতা বাড়ানো হবে (ট্যাক্স নেট)।
আজ বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা প্রদান করতে রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এনবিআর। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ট্যাক্স কার্ড তুলে দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত ২০টি দেশের মধ্যে থাকবো। ট্যাক্সের রেট কমানো হবে। আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি আমরা ট্যাক্সের রেট কমাবো। তবে করের আওতা বাড়ানো হবে (ট্যাক্স নেট)। আমরা শিগগীর একটা কমিটি করবো সেখানে দেখবো কিভাবে তিন লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা অর্জন করা যায়। আমরা করের লক্ষমাত্রা কখনও কমাবো না।
তিনি বলেন, দেশে এখন চার কোটি মানুষ মধ্য আয়ে আছে। কিন্তু তারা কর দিচ্ছে না। হয়তো আমাদের থেকে ভালোবাসা পাচ্ছে না। ভালোবেসে সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
কর আদায়ে কোথায় সমস্যা আছে সেটা বের করা হবে জানিয়ে কামাল বলেন, তিন শ্রেণি এখানে জড়িত। এক পক্ষ কর দেয়, আরেক পক্ষ আমরা (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), আর মাঝখানে থাকে আয়কর আইনজীবী। এই তিন হলো মূল স্টক হোল্ডার।
উপস্থিত করদাতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা আমাদের পছন্দ করেন বলে কর দিচ্ছেন। আপনাদের টাকা সরকার যথযথ যায়গায় ব্যবহার করবে। আপনারা দোশের অর্থনীতিকে এগিয়ে দিচ্ছেন। এ সময় ট্যাক্স দেয়াকে ভালোকাজ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বালেন, ভালোকাজে সবাইকে উৎসাহিত করতে হয়।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ২০৩০ সালে তাইওয়াকে অর্থনীতিতে পেছনে ফেলে এশিয়ার পঞ্চম দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবো। তখন আমাদের অর্থনীতির আয়তন হবে এক ট্রিলিয়ন ডলার। এই কাজগুলো করবো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ নির্মাণ করতে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সচিব অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও চেয়ারম্যান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি (এমপি) আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রমুখ।
এনবিআর চেয়ারম্যান সভাপতির বক্তৃতায় বলেন, রাজস্ব কর্মকর্তাদের জন্য কোনো করদাতারা হয়রানির শিকার হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে জর্দা ব্যবসায়ী হাজী কাউস মিয়াকে ‘সবার রত্ন’ বলে পরিচয় করিয়ে দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। গতকাল বুধবার সেগুনবাগিচায় এনবিআরের কার্যালয়ের সামনে ট্যাক্স প্রাপ্তদের তালিকা থেকে কাউস মিয়ার নাম বাদ দেয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছিল তামাকবিরোধী নারী জোট।
জর্দা মিয়াকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, হাজী কাউস মিয়া আমাদের রত্ন। তিনি সব সময় আমাদের নিয়মিত কর দিয়ে আসছেন। তার ভেতরে সর্বোচ্চ কর দাতা হওয়ার প্রচণ্ড ইচ্ছা রয়েছে। তার কর দেয়ার যে আগ্রহ এমন আগ্রহ সবার মাঝেই থাকা উচিৎ।
- আরও পড়ুন >> উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যানের অনুরোধে হাজী কাউস মিয়া বক্তৃতা দিতে এসে বলেন, জর্দা কৌটার ওপরে আমার ফটো থাকে বলে আপনারা আমাকে জর্দা ব্যবসায়ী বলেন। আমার আরো অনেক ব্যবসা আছে।