আমাদের মূল কাজ হচ্ছে সরকারকে সরানো : মির্জা ফখরুল

মত ও পথ প্রতিবেদক

মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

‘আমাদের মূল কাজ হচ্ছে এই সরকাকে সরাতে হবে। এজন্য জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। দলমত নির্বিশেষে সব মানুষকে এক করে দালালের মতো বসে থেকে যারা আমাদের সবকিছুকে তছনছ করে দিয়েছে তাদেরকে সরাতে হবে। সেজন্য আমরা বলেছি রাতের নির্বাচন বাতিল করতে হবে। অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নতুন নির্বাচন করতে হবে। যার মাধ্যমে জনগণের সরকার হবে। গণতান্ত্রিক সরকার হবে।’-বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে হোটেল পূর্বাণীতে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত ‘ফেনী নদীর পানি চুক্তি : বাংলাদেশের সম্ভাব্য বিপর্যয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

ফেনী নদীর পানি চুক্তির বিষয়ে সংসদে কোনো আলোচনা হয়নি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা এমন একটা সংসদ যেখানে এই চুক্তিগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমাদের সংবিধানে বলা আছে যেকোনো চুক্তি নিয়ে সংসদে আলোচনা হতে হবে। অথচ তারা এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করেনি।

ফেনী নদী বাংলাদেশের নদী জানিয়ে ফখরুল বলেন, এটি অভিন্ন নদী নয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলছেন খাবার পানি চাইলে কি পানি দেব না? ভালো কথা পানি দেবেন। কিন্তু আমাদের যে লক্ষ লক্ষ মানুষ তিস্তার অববাহিকায় নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। তাদের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, জীবন-জীবিকা নষ্ট হচ্ছে। সে বিষয় নিয়ে আপনারা কথা বলবেন না? ১২ বছরেও তিস্তার এক ফোটা পানি আনতে পারলেন না!

তিনি বলেন, আমরা কখনও ভারত বিরোধিতা করিনি। ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। সমস্যা হলো আজকে এমন একটা সরকার যারা আমাদের সমস্যাগুলো নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলতে পারে না। বার্গেনিং করতে পারে না। সেই শক্তিটা তাদের নেই।

আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের মানুষের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে সর্বোপরি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে তারা একটি পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল বলেন, এই সরকার আসার পর গত ১২ বছর থেকে শুনছি তিস্তা চুক্তি এই হয়ে যাচ্ছে, এই হয়ে যাবে। আমাদের সঙ্গে (ভারতের) সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে। অথচ তিস্তা থেকে আমরা এক ফোটা পানিও পাইনি।

খালেদা জিয়াকে কেন আটক করে রাখা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তাকে আটক করে রাখার কোনো বৈধতা নেই। আইনগতভাবে তিনি আটক থাকতে পারেন না। একটা মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে। তাকে আটক রাখা হয়েছে এজন্য যে তিনি হলেন স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বের প্রতীক। যখন টিপাইমুখ বাঁধ করার জন্য তোড়জোড় চলছিল তখন খালেদা জিয়া সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন। তিনি প্রেস কনফারেন্স করেছেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। গণতন্ত্রের জন্য তিনি সারা জীবন লড়াই করেছেন। সেজন্যই আজকে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- রুয়েট এর পুরাকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন।

অ্যাব এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশের) মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, ডিউইউজের (একাংশের) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে