ইউক্রেন কাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে অভিশংসন তদন্তের শুনানি চলমান অবস্থায় টুইটারে এক সাক্ষীর প্রতি রীতিমত বাক্যবাণ ছুঁড়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ- এর মাধ্যমে ট্রাম্প সাক্ষীকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।
শুক্রবার একটি টুইটে ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, মেরি ইউভানোভিচ সব জায়গাতেই দুর্নীতি করেছেন। তিনি সোমালিয়া থেকে শুরু করেন, কিভাবে সেটাকে যেতে দেয়া হলো? পরে তাকে ইউক্রেন পাঠানো হলে যেখানে দ্বিতীয় দফার ফোনালাপে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট আমাকে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা মার্কিন প্রেসিডেন্টের রয়েছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে টেলিফোনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জিলেনস্কিকে চাপ দিয়েছিলেন। এর জন্য তিনি ইউক্রেনে বাৎসরিক মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন।
জো বাইডেনের ছেলে ইউক্রেনের গ্যাস কোম্পানি বুরিসমায় এক সময় কাজ করতেন। গত সেপ্টেম্বরে গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সাবেক এক কর্মকর্তা জিলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের এই ফোনালাপ ফাঁস করে দেন। এতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে।
এর ভিত্তিতে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্তের ঘোষণা দেয়।
বুধবার প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা কমিটির সামনে অভিশংসন তদন্তের প্রকাশ্য শুনানি শুরু হয়। এরপর শুক্রবার হয় দ্বিতীয় দফার শুনানি। এতে সাক্ষ্য দেন ইউক্রেনে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি ইউভানোভিচ। ইউক্রেনে নিযুক্ত থাকার সময় কিভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং কিভাবে ট্রাম্প প্রশাসন হঠাৎ করেই চলতি বছরের শুরুতে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় শুনানিতে সেই বর্ণনা দেন ইউভানোভিচ ।
গোয়েন্দা কমিটির প্রধান ট্রাম্পের ওই টুইটের বিষয়ে ইউভানোভিচের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট যেটা করার চেষ্টা করছেন আমি সেটা নিয়ে কথা বলতে পারি না। কিন্তু আমার মনে হয় তিনি যেটা করছেন সেটাকে ভয় দেখানো বলা যায়।
পরে কমিটিতে থাকা ডেমোক্র্যাট সদস্য এরিক সোয়ালওয়েল সাংবাদিকদের বলেন, এটা বাধা দেওয়ার আরও প্রমাণ : ভয় দেখানো, সাক্ষীর জবানবন্দিতে অবৈধ প্রভাব বিস্তার। তবে তার জ্ঞানে তিনি যে কাজটি করেছে তা সত্যিকারার্থে অপরাধ। নিরাপরাধ লোক এ ধরনের কাজ করবে না।
তবে ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি এ মন্তব্যের মাধ্যমে মোটেও ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন না বলে মনে করেন।
হোয়াইট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার কথা বলার অধিকার আছে। অন্যদের মতো আমারও মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে।