বলিভিয়ায় অব্যাহত বিক্ষোভে খাদ্য ও গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বলিভিয়ায় মোরালেস সমর্থকদের বিক্ষোভ

বলিভিয়ায় সদ্য পদত্যাগী প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের সমর্থকদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এমন অবস্থায় দেশটিতে গ্যাস ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ফিলিং স্টেশনগুলোতে কোনো গ্যাস নেই। গ্যাসে চলা গাড়ির চালক ও মালিকরা হতাশার মধ্যে রয়েছেন। খবর এএফপির।

টেক্সি চালক কার্লোস লারা তিন দিন ধরে একটি গ্যাস স্টেশনে রয়েছেন। তার গাড়ির মধ্যেই ঘুমোচ্ছেন তিনি।

universel cardiac hospital

তার আশা, মোরালেসের সমর্থকরা গ্যাসের বিরুদ্ধে অবরোধ তুলে নিবে এবং গাড়িতে গ্যাস নিতে পারবেন তিনি।

 ‘নো গ্যাস, নো ওয়ার্ক’ এই স্লোগানে মোরালেসের সমর্থকরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। তারা রাজধানী লাপাজ থেকে পূর্বের একটি শোধনাগারে যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন।

কার্লোস লারা গত বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা থেকে গ্যাস স্টেশনে অবস্থান করছেন। গাড়ির মধ্যে বসে বসে রেডিও শুনে এবং অন্য ট্যাক্সিচালক বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সময় কাটছে তার। তারা সবাই গ্যাসের জন্য অপেক্ষা করছেন, গ্যাস পেলেই রাস্তায় নামতে পারবেন তারা।

লারা বলেন, গ্যাস স্টেশনের লোকেরা জানাচ্ছেন সম্ভবত কাল গ্যাস আসবে। একদিন অতিবাহিত হয়ে গেলে তারা আবারও একই কথা বলছেন।

লাইনে থাকা অন্যান্য গাড়ি দেখিয়ে লারা বলেন, আমরা এখন এমন অবস্থায় রয়েছি’। বলিভিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী লাপাজের প্রতিটি গ্যাসক্ষেত্রের অবস্থা একই।

এছাড়া খাদ্যের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। সামান্য যেসব খাদ্য এখনো মজুত রয়েছে তার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে খুব দ্রুতই ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে লাপাজ সহ বলিভিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলে।

গত ২০ অক্টোবরের নির্বাচনে দুর্নীতির অভিযোগে মোরালেসের বিপক্ষে বিক্ষোভে নামে বিরোধী দলগুলো। বিক্ষোভের চাপে সপ্তাহখানেক আগে পদত্যাগ করেন মোরালেস। তারপর তিনি ম্যাক্সিকোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন।

এরপর নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন বিরোধী সিনেটর জিয়েনাইন আনেজ। তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিলে সিনেটের ওই সেশন বয়কট করেন মোরালেসের দলের সিনেটররা। যে কারণে কোরাম সংকট দেখা দেয় এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনেজকে নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয় সিনেট।

এরপর দেশজুড়ে পাল্টা বিক্ষোভ শুরু করেন মোরালেসের সমর্থকরা। এখন পর্যন্ত মোরালেসের সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীল সংঘর্ষে অন্তত নয় জন নিহত হয়েছেন বলে খবর দিয়েছে একটি মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা।

বিক্ষোভকারীরা চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে লাপাজ থেকে পার্শ্ববর্তী শহর এল অল্টোতে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। এখন লাপাজ থেকে অর্থনৈতিক রাজধানী সান্টা ক্রুজে যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ করে দিয়েছে তারা।

এছাড়া বিক্ষোভকারীরা সাঙ্কেতা শোধনাগার বন্ধ করে দিয়েছে। এই শোধনাগার থেকেই পুরো লাপাজ অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ করা হয়।

দেশটির নতুন পুলিশ প্রধান কোলোনেল রুডোলফো মনটেরো জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে রবিবার পুলিশের এল অল্টোর আঞ্চলিক কমান্ডার আলোচনায় বসেন। তবে সে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে