দেশে সড়ক দুর্ঘটনা উদ্বেগজনক মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় একটি যুগোপযোগী সড়ক পরিবহন আইনের জনদাবি ছিল দীর্ঘদিনের। গত বছর ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। সেদিন থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারা দেশে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর তড়িঘড়ি করে পাস করা হয় সড়ক পরিবহন আইন।
নভেম্বর মাসের প্রথমদিন থেকে আইনটি কার্যকর করা হয়। তবে পিছিয়ে দেয়া হয় এর প্রয়োগ। সরকারের এই সিদ্ধান্তে জনমনে এই আইনটির প্রয়োগ নিয়ে শঙ্কা থাকলেও একধরনের স্বস্তিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে পরিবহন শ্রমিকেরা এটিকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় পরিবহন শ্রমিকেরা নতুন সড়ক পরিবহন আইনের ‘সংস্কার’-এর দাবিতে সেই পুরনো রাস্তায় হাঁটছেন। সরকার আনুষ্ঠানকিভাবে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ যেদিন থেকে প্রয়োগ করতে শুরু করেছে সেদিন থেকেই তারা ধর্মঘট ও কর্মবিরতি শুরু করেছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। যদিও সরকার বলছে কারো চাপে পড়ে সরকার আইন প্রয়োগ থেকে পিছপা হবে না। আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্ত স্বাগত জানাই।
আমরা মনে করি, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের শত চাপের মুখেও সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন করা উচিত হবে না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইনটির যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে উঠেছে।আর এ আইন কাউকে শাস্তি দিতে নয়, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং দুর্ঘটনা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে- সড়ক দুর্ঘটনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ বাস্তবতায় দুর্ঘটনা রোধে সরকারের কঠোর ভূমিকার বিকল্প নেই। যদিও পরিবহন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আইনে সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড করায় মূলত পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থই প্রাধান্য পেয়েছে। তারপরও আমরা আশা করব- সরকার জনস্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে এ আইনটি কার্যকরে আন্তরিক হবে।