স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে নতুন সড়ক আইন সংশোধনসহ ৯ দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে থাকা বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বৈঠকে বসেছ।
আজ বুধবার রাত সোয়া ৯টার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসভবনে এ বৈঠক শুরু হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাতেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলীসহ পরিষদের তিন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন।
বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার বিকালে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কর্মকর্তারা।
ওই বৈঠকেও আইন কার্যকর না করার দাবি জানিয়েছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা।
তারা লার্নার (শিক্ষানবিস) লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালালে মামলা না দেয়ার দাবি তোলেন। এদিকে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ধীরে চলার কৌশল নিচ্ছে। অপরদিকে মঙ্গলবারও পুলিশ নতুন আইনে গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করেনি।
তারা আপাতত মামলা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন আইন নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বৃহস্পতিবার থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।
গত ১ নভেম্বর নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করে সরকার। তবে নতুন আইনে মামলা ও শাস্তি দেয়ার কার্যক্রম মৌখিকভাবে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
গত বৃহস্পতিবার সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে। রোববার সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, ওইদিন থেকেই আইন কার্যকর শুরু হয়েছে। এরপর থেকেই ঘোষিত-অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট ডাকতে শুরু করেছে পরিবহন সংগঠনগুলো।
মঙ্গলবার তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড কার্যালয়ে ঐক্য পরিষদের নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে পণ্য পরিবহনে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেন। এত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান।
তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইন স্থগিত করে মালিক শ্রমিকদের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরিমানা ও দণ্ডের বিধান করতে হবে। একটি যুগোপযোগী বাস্তবসম্মত ও বিজ্ঞানভিত্তিক সঠিক আইন প্রণয়ন করতে হবে।
নতুন আইন প্রত্যাখ্যান করছেন কিনা- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, পুরো আইন প্রত্যাখ্যান করছেন না। কিছু ধারার সংশোধন চান। আইনের সব ধারা নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। কিছু বিষয় নিয়ে আমরা বিভিন্ন সময় দাবি জানিয়েছি।
কিন্তু সরকার আশ্বস্ত করলেও পরে সেগুলো বাস্তবায়ন করেনি। এ কারণেই কর্মসূচি ঘোষণা করা হল।
সংগঠনের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম বলেন, হালকা লাইসেন্স দিয়ে ভারি গাড়ি চালানো যায় না। কিন্তু ভারি গাড়ি চালানোর জন্য বিআরটিএ লাইসেন্সও দিচ্ছে না। হালকা লাইসেন্স দিয়ে ভারি গাড়ি চালাতে গেলেই জরিমানা করা হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা।
এই টাকা একজন শ্রমিক কীভাবে দেবে? তাই চালকরা গাড়ি চালাবেন না। তিনি বলেন, নতুন আইনে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান চালকরা গাড়ি চালাবেন না। কিছু হলেই আছে জরিমানা ও মামলা।
এর ওপর আবার চালকের লাইসেন্সের ওপর পয়েন্ট কাটা হবে। এসব কারণে চালকরা আর গাড়ি চালাবেন না।