কক্সবাজারের টেকনাফে ১৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ এখনও অবিক্রীত পড়ে আছে। মালিকরা এ সব লবণ মাঠের আশপাশে মজুদ করে রেখেছেন। উৎপাদন খরচের বিপরীতে লবণের মূল্য অনেক কম হওয়ায় বিক্রি না করেই তারা ওই লবণ রেখে দিয়েছেন গত ২-৩ মৌসুম ধরে।
তবুও নতুন মৌসুমে অনেকে ইতিমধ্যে চাষে নেমে পড়েছেন আবার অনেকে চাষের প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
বিসিক সূত্র জানায়, গত মৌসুমে টেকনাফে ১ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়েছিল। কক্সবাজার জেলায় উৎপাদন হয়েছিল ১৮ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন লবণ। বিক্রির পর বর্তমানে জেলায় মাঠপর্যায়ে সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন লবণ অবিক্রীত আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিমণ লবণের মূল্য ১৯০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি ৫ টাকার কম। প্রতিমণ লবণ উৎপাদনে কৃষকের খরচ পড়েছে ২০০ টাকা।
লবণ ব্যবসায়ী আবদুল গাফফার ও আবদুস ছালাম কালু জানান, উৎপাদনের চেয়ে মূল্য কম হওয়ায় বিগত মৌসুমের ১৫ টন লবণ অবিক্রীত পড়ে আছে। খরচ না পোষালে কীভাবে লবণ ব্যবসা করব। প্রতিবছর লোকসান দিয়ে এভাবে ব্যবসা করা যায় না।
হ্নীলা লবণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোছাইন মুহাম্মদ জানান, ন্যায্যমূল্য পাওয়ার আশায় গত মৌসুমে লবণ জমিয়ে বড় ধরনের ভুল করেছি। লবণ চাষ করে বর্তমানে লাখ লাখ টাকার ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।
হ্নীলা লবণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ছাবের খান জানান, উৎপাদন খরচের চেয়ে মূল্য কম হওয়ায় লোকসান হচ্ছে বিধায় গত মৌসুমের লবণ এখনও মজুদ রয়েছে। পরবর্তী মৌসুম চলে আসার সময় হলেও ব্যবসায়ীরা লবণ বিক্রি করতে পারছেন না।
তিনি লবণের ন্যায্য মূল্য বৃদ্ধির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
টেকনাফের লবণ চাষী মো. রফিক জানান, ন্যায্য দাম না পাওয়ায় ৩ মৌসুম আগের লবণ এখনও গুদামে পড়ে আছে। প্রতিবছর দাম বাড়ার আশায় থাকলেও দাম আর বাড়েনি। চলতি মৌসুমে চাষে নামবেন কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।
বিসিক টেকনাফের ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান জানান, টেকনাফে ১৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ অবিক্রীত আছে। গত ২০১৮-১৯ মৌসুমে ৩২২৭ একর জমিতে লবণ চাষ হয়েছিল। ২০১২-১৩ সালের দিকে লবণ চাষের জমি ছিল ৫ হাজার একরের বেশি।
এদিকে চলতি মৌসুমের জন্য সাবরাং, টেকনাফ ও বাহারছড়ার লবণ চাষীরা ইতিমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন। আগামী সপ্তাহে হ্নীলা-হোয়াইক্যংয়ের চাষীরা লবণ চাষ শুরু করবেন।