‘ভালোবাসা আর কিছু সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি দিয়ে ঘিরে থাকা আমাদের দীর্ঘ ২০ বছরের যাত্রা এখানেই শেষ হচ্ছে। আমরা বুঝতে পেরেছি, আমাদের দুজনের পথ এখন থেকে আলাদা। আমরা দুজন ব্যক্তিগত বিষয়গুলো ব্যক্তিগত রাখতেই পছন্দ করি। এখন এমন একটা সময় এসেছে, তাই এসব জানাতেই হচ্ছে। তবে আমরা আলাদা থাকলেও একজন আরেকজনের প্রয়োজনে পাশে থাকব, বিশেষ করে আমাদের দুই মেয়ে মাহিকা আর মায়রার জন্য।’ গত বছর ২৮ মে বোম্বে টাইমসকে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন বলিউড তারকা অর্জুন রামপাল আর ১৯৯৬ সালের ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া’ ও সুপার মডেল মেহের জেসিয়া। ১৯৯৮ সালে বিয়ে করেন তাঁরা।
সেই যৌথ বিবৃতিতে অর্জুন রামপাল আর মেহের জেসিয়া আরও লিখেছেন, ‘আমরা যখন কাছাকাছি ছিলাম, তখন সব সময় দৃঢ় ছিলাম। আজ যখন আমরা একে অপরকে কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছি, তখনো দৃঢ় থাকতে চাই। আর ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আমরা আর কোনো মন্তব্য করব না।’
আজ বৃহস্পতিবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তাঁদের বিবাহিত জীবনের ইতি ঘটেছে। মুম্বাইর বান্দ্রার এক পারিবারিক আদালতে গত মঙ্গলবার আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো অর্জুন রামপাল আর মেহের জেসিয়ার ২১ বছরের বিবাহিত জীবন। গত ৩০ এপ্রিল পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে ডিভোর্স কার্যকরের অনুমতি চেয়ে তাঁরা আবেদন করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে এই আদালতের প্রিন্সপাল জজ শৈলজা সাওয়ান্ত তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদের আদেশ দেন।
বিবাহ বিচ্ছেদে কী সমঝোতা হয়েছে, তা প্রকাশ করেননি অর্জুন রামপাল বা মেহের জেসিয়া। তবে এটা জানা গেছে, এই আদেশ অনুযায়ী তাঁদের দুই মেয়ে মাহিকা আর মায়রা মায়ের সঙ্গেই থাকবে।
অর্জুন রামপাল ও মেহের জেসিয়া ভিন্ন ধর্মে হওয়ায় বিশেষ বিবাহ আইন অনুযায়ী, প্রথম এক বছর তাঁরা আলাদা থেকেছেন। এর পর বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য তাঁরা আবেদন করেন।
বিবাহ বিচ্ছেদের খবর প্রকাশ্যে আসার পর টাইমস অব ইন্ডিয়াকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অর্জুন রামপাল বলেছেন, ‘এই বিষয় নিয়ে কেন প্রতিক্রিয়া জানাব? কেন এটা কারও জানা প্রয়োজন? এই বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’ তবে মেহের জেসিয়া কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।
অনেক দিন ধরে অর্জুন রামপাল আর মেহের জেসিয়ার মন-কষাকষি চলেছে। এমনকি বিটাউনে জোর গুঞ্জন, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় এক ব্যক্তির আবির্ভাব হয়। আর এই তৃতীয় ব্যক্তিটি হলেন হৃতিকের সাবেক স্ত্রী সুজান খান। বলিউড তারকা অর্জুনের সঙ্গে সুজানের সম্পর্ক নাকি ক্রমেই ঘনিষ্ঠ হয়। আর তা মোটেই পছন্দ করেননি মেহের। অর্জুন ও সুজানের মাখো মাখো সম্পর্কের জন্য মেহের খুব রেগে যান। আর কোন স্ত্রী তাঁর স্বামীর জীবনে অন্য নারীর অস্তিত্ব মেনে নেবেন? তাই স্বাভাবিকভাবে তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্কে চিড় ধরে।
এর আগেও একবার তাঁদের সম্পর্ক ভাঙতে বসেছিল। কিন্তু অর্জুন-মেহের তাঁদের দুই মেয়ে মাহিকা আর মায়রার জন্য তাঁদের ভাঙাচোরা সম্পর্কে প্রলেপ লাগান। মেয়েদের মুখের দিকে চেয়ে তাঁরা তাঁদের সম্পর্ক জোড়া লাগান। অর্জুন-মেহেরকে মেয়েদের নিয়ে বিদেশে ছুটি কাটাতে দেখা গেছে। এই সবকিছু ছিল তাঁদের চিড় ধরা সম্পর্ক জোড়া লাগানোর প্রয়াস মাত্র।
এরই মধ্যে অর্জুন রামপালের জীবনে এসেছে নতুন নারী। তিনি গ্যাব্রিয়েলা ডেমেট্রিয়াডেস, দক্ষিণ আফ্রিকার মডেল, অভিনয় করেছেন হিন্দি ও তেলেগু ছবিতে। গত বছর আইপিএলের একটি দলের ‘বিজ্ঞাপনী মুখ’ হন তিনি। সেই দলের অতিথি আপ্যায়নের দায়িত্ব ছিল অর্জুন রামপালের প্রতিষ্ঠানের ওপর। তখন অর্জুন রামপাল আর গ্যাব্রিয়েলা ডেমেট্রিয়াডেসের আলাপ হয়। সেই আলাপ থেকে তাঁরা দ্রুত ঘনিষ্ঠ হন। বিয়ে না হলেও তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্ম হলো গত ১৮ জুলাই। তাঁদের ছেলের নাম আরিক