‘১৯৭১ সালে যে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে সম্মানের আসনে পরিচিতি ছিল, ১৯৭৫ সালের পর সেই বাংলাদেশ খুনের রাজ্যে পরিচিত হয়’-বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার সশস্ত্রবাহিনী দিবস উপলক্ষে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
একই অনুষ্ঠানে ২০১৯-২০ সালে সশস্ত্রবাহিনীর শান্তিকালীন সেনা/নৌ/বিমান বাহিনী পদক এবং অসামান্য সেবা পদকপ্রাপ্ত সদস্যদের পদক দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা সারাটা জীবন এ দেশের মানুষের কথা বলেছেন। শেষ পর্যন্ত নিজের রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছেন, এ দেশকে তিনি কত ভালোবাসতেন। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের মানুষ আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে এবং আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। এজন্য আমি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের পর বঙ্গবন্ধুর নামটা পর্যন্ত মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। তখন যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তারা খালি হাতে খালি পায়ে হাতের কাছে যা পেয়েছেন তাই নিয়ে যুদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। সেই ইতিহাস গৌরবের। এ ইতিহাস আমরা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা করতে পেরেছি, যেটা জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। জাতির পিতা হত্যাকারীদের বিচারও আমরা করতে পেরেছি। ফলে বাংলাদেশের আকাশে যে কালো মেঘ ছিল তা সরে গিয়ে নতুনভাবে আলোকিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ বিশ্বে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হবে। আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে কত মানুষ স্বজন হারিয়েছে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে যারা এখনও বেঁচে আছে তাদর এই ত্যাগ কখনো বৃথা যেতে পারে না। মাঝখানে একটি অসহায় এবং অন্ধকার যুগ আমাদের ছিল। আজকের সেই অন্ধকার যুগ আমরা কাটিয়ে উঠেছি। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, যারা জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে তারা আমাদের কাছে সম্মানিত। আমি যখনই সরকার এসেছি তখনই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। আমি দেখেছি কত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার অর্ধাহারে-অনাহারে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। তারা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। তখন থেকেই আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দেয়া শুরু করি।