কলকাতায় আজ শুক্রবার নিজেদের প্রথম দিবারাত্রির টেস্টে মাঠে নামবে বাংলাদেশ-ভারত। ইডেন গার্ডেন্সে খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায়। এই ম্যাচটি দুই দলের জন্য অনেক কারণেই গুরুত্বপূর্ণ।
এর মধ্যে একটি হলো এবারই প্রথম গোলাপি বলের ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। উপমহাদেশের মাটিতে এটিই হবে প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ঘণ্টা বাজিয়ে এই ম্যাচের উদ্বোধন করবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উপস্থিত থাকবেন।
ভারত সফরে এটি শেষ ম্যাচ বাংলাদেশের। সফরের শুরুতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-২ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। এরপর ইন্দোরে অনুষ্ঠিত দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ইনিংস ও ১৩০ রানে হারে বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে দুই ইনিংসে বাংলাদেশের রান ছিল যথাক্রমে ১৫০ ও ২১৩।
ইন্দোরে ভারতীয় পেসারদের সামনে ‘অসহায় আত্মসমর্পণ’ করে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে ভারতের পেসাররা নিয়েছিলেন ১৪ উইকেট। ইডেনেও বাংলাদেশের ভয় ভারতের এই পেস আক্রমণ নিয়ে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গোলাপি বলে একটু বেশি সুইং করে।
গোলাপি বল নিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মনে করছেন, ‘গোলাপি বলে টেস্ট খেলাটা আমাদের জন্য বাড়তি চ্যালেঞ্জ। ইডেনে ঐতিহাসিক টেস্টে মাঠে নামার জন্য উদগ্রীব হলেও চিন্তার ভাজ তো রয়েছেই। তবে লাল, সাদা বলের তুলনায় গোলাপি বল অনেক বেশি সুইং করে। দুদিন অনুশীলনের মাধ্যমে সুইংয়ের সঙ্গে অনেকটা মানিয়ে নিয়েছি।’
গোলাপি বল সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা নেই বাংলাদেশ শিবিরে। ইন্দোরে মাত্র দুদিন অনুশীলন করার সুযোগ মিলেছে। ইডেন গার্ডেন্সে বুধবার ও বৃহস্পতিবার আরও দুদিন। অর্থাৎ চারটি সেশন অনুশীলন করে গোলাপি বলের লড়াইয়ে নামতে প্রস্তুত তারা।
বাংলাদেশ দলের ফার্স্ট বোলার আল-আমিন বলেছেন, ‘ইডেনে গোলাপি বলে ঐতিহাসিক টেস্ট খেলার জন্য মুখিয়ে আছি। গোলাপি বল সম্পর্কে আমাদের খুব বেশি ধারণা নেই। আশা করছি মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে না। তবে এই ম্যাচটা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জিং হতে চলেছে।’
আল-আমিন মনে করছেন তাঁদের মতো ভারতীয় ক্রিকেটারদেরও গোলাপি বলে সমস্যায় পড়তে হবে। তাঁর কথায়, ‘গোলাপি বল সম্পর্কে আমাদের খুব বেশি ধারণা নেই। বেশ কয়েকজন ভারতীয় ক্রিকেটারেরও একই অবস্থা। লাল বলের সঙ্গে গোলাপি বলে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তবে দুই দলের খেলোয়াড়দেরই গোলাপী বলে খেলতে হবে। বোলার হিসেবে একটা কথা বলতে পারি, গোলাপি বলে বোলাররা কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাবে। আমাদের সামনে যে সুযোগ আসবে সেটা কাজে লাগাতে হবে। না হলে ভারতীয় দলের ওপর চাপ তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
এই ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে দুইটি পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। বাদ পড়তে পারেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও পেসার ইবাদত হোসেন। সুযোগ পেতে পারেন দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও আল-আমিন হোসেন।
এদিকে আগামীকালের গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্ট নিয়ে কলকাতা জুড়ে এখন উন্মাদনা। শহর সাজছে গোলাপি রংয়ে। গোলাপি বেলুন, গোলাপি মাসকট, সব কিছুতেই গোলাপি টেস্টের ছোঁয়া। ময়দানের কোনও কোনও তাঁবুও সেজেছে গোলাপি রংয়ে।
বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য): সাদমান ইসলাম, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিথুন, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম/মোস্তাফিজুর রহমান, আবু জায়েদ রাহি, ইবাদত হোসেন/আল-আমিন হোসেন।
ভারত একাদশ (সম্ভাব্য): রোহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), অজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা (উইকেটরক্ষক), রবীচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব, মোহাম্মদ শামি।