বিশেষ শিশু আদালত গঠনে কাজ চলছে : প্রধান বিচারপতি

মত ও পথ প্রতিবেদক

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ফাইল ছবি

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, বিদ্যমান আইনের আলোকে বিশেষ শিশু আদালত গঠনের কাজ চলছে। আদালত গঠনের কাজ শেষ হলে দ্রুততম সময়ে মধ্যে বিচারক নিয়োগ দেয়া হবে।

আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে শিশু পাচার বিষয়ক আন্তঃসীমান্ত সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

universel cardiac hospital

প্রধান বিচারপতি বলেন, মানবপাচার এক ধরনের সহিংসতা। নারী ও শিশুরা সব চেয়ে বেশি এ সহিংসতার শিকার। তাদেরকে পাচার করে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লাগানো হয়। এমনকি অসামাজিক ও অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটছে। এর বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন।

দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশি সময় পাচার সংক্রান্ত মামলা বিচারধীন সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশে বিচারক স্বল্পতা রয়েছে। আবার বিচারকরাও অনেক সময় সাক্ষী পান না। সাক্ষীরা আদালতে আসতে চান না। তবে আমি নির্দেশনা দিয়েছি রাত ১০টায়ও যদি সাক্ষী হাজির হয়, তার সাক্ষ্য নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশে ১০ লাখ মানুষের বিপরীতে একজন বিচারক। ভারতে আছে ১৮ ও যুক্তরাষ্ট্রে ১২৭ জন। আর বাংলাদেশে যেখানে ৮৫ শতাংশ মামলা আদালতে যায়, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ১৫ শতাংশ মামলা আদালতে যায়। ফলে মামলার বিচার শেষ হতে সময় লাগাই স্বাভাবিক। এছাড়া সাক্ষ্য ও তথ্য প্রমাণের অভাবে বেশির ভাগ মামলায় সাজা হয় না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে অতিরিক্ত সচিব ফেরদৌসি আক্তার বলেন, একক দেশের পক্ষে মানবপাচার বন্ধ সম্ভব নয়। এটা বৈশ্বিক সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে সরকার ইতোমধ্যে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন আঞ্চলিক পর্যায়ে সম্মিলিত পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে বিশাল সীমান্ত এলাকায় বিশেষ যৌথ পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

ভারতের প্রতিনিধি মানবেন্দ্র নাথ মণ্ডল বলেন, পাচারের শিকার হওয়া ৪০-৫০ জন শিশুকে প্রতিবছর আমরা ভারত থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাঠিয়ে থাকি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নানা আইনি জটিলতায় পড়তে হয়। তাই সুনির্দ্দিষ্ট আইনের পাশাপাশি যথাযথ বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো দরকার।

অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, দেশে আইনের অভাব নেই। তবে পাচারের শিকার শিশুরা আইনি সুরক্ষা পায় না। এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত মূল হোতারা পার পেয়ে যায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া আহ্বান জানান তিনি।

ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাসুদ আলীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফেরদৌসি আক্তার, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শিব নাথ রায়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় যুগ্ম সচিব গাজী উদ্দিন মুহাম্মদ মুনির, ভারতের বেসরকারি সংস্থা এসএলএআরটিসির প্রতিনিধি মানবেন্দ্র নাথ মণ্ডল, এ্যাটসেকের দিল্লী সমন্বয়ক রমা দেবব্রত, প্ল্যান বাংলাদেশের ওরলা মুরফি, আইওএমর বাংলাদেশ প্রধান গিওরগি গিয়ারগিয়া, জাতীয় শিশুশ্রম মনিটারিং কমিটির কো-চেয়ার অ্যাডভোকেট সামলা আলী, টিডিএইচ নেদারল্যান্ডসের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাহমুদুল কবীর প্রমুখ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে