রাজনীতিতে নেতিবাচক ধারণা বদলাতে চান নতুন যুবলীগ চেয়ারম্যান

বিশেষ প্রতিনিধি

শেখ ফজলে শামস পরশ
শেখ ফজলে শামস পরশ। ফাইল ছবি

যুবলীগের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ দেশের রাজনীতি নিয়ে যুবসমাজের মধ্যে যে নেতিবাচক ধারণা আছে, সেখান থেকে রাজনীতিকে ইতিবাচক ধারায় আনতে কাজ করার কথা জানিয়েছেন। তার ভাষ্য, রাজনীতিতে নেতিবাচক ধারণা বদলে দেবেন তিনি।

আজ শনিবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা জানান।

universel cardiac hospital

শেখ ফজলে শামস পরশ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে এবং সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের বড় ভাই। এতদিন সরাসরি রাজনীতিতে না জড়ালেও সংগঠনের দুঃসময়ে বাবা শেখ ফজলুল হক মনির হাতে গড়া সংগঠনের দায়িত্ব পেলেন তিনি।

দলীয় রাজনীতিতে যুক্ত না হলেও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির ব্যক্তিত্ব হিসেবে বেশ আস্থাভাজন ছিলেন পরশ। গত ১০ বছর ধরে তিনি রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।

পরশ বলেন, রাজনীতির জন্য আমি এবং আমার ভাই শেখ ফজলে নূর তাপস আমাদের মা, বাবা, স্বজন সব হারিয়েছি। আমাদের বেদনা শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) এবং শেখ রেহানা অনুধাবন করেন।

রাজনীতি থেকে দূরে থাকার কারণ তুলে ধরে যুবলীগের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বলেন, যে মানুষ (বঙ্গবন্ধু) রাজনীতির জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করল তাকে যখন ষড়যন্ত্র করে হত্যা করল, আশাহত হওয়াটাই স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ এবং তার কন্যার দেশের প্রতি উদার ভালোবাসা থেকে আমি সাহস পাই।

তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা শেখ হাসিনার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পাই। আমি যে দায়িত্ব পেয়েছি আপনাদের পাশে থেকে একজন কর্মীহিসেবে তা যথাযথাভাবে পালনের চেষ্টা করব। আপনারা আমার শক্তি হবেন। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন।

পরশ বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী দুনীতির বিরুদ্ধে যে জিরো টলারেন্সের ডাক দিয়েছেন- তা আমি দ্বিতীয় বিপ্লব হিসেবে দেখি। এই কর্মসূচি সফল করার জন্য কাজ করব। আমার চেষ্টা থাকবে, যুবসমাজ ‘আই হেটস পলিটিক্স’ থেকে বেরিয়ে এসে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে কাজ করবে।

বক্তব্যের শুরুতে পরশ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসাকে স্মরণ করেন। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ, ১৫ আগস্টে নিহতদের, জাতীয় চার নেতা এবং বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত যুবলীগ নেতাদের স্মরণ করেন।

পরশ তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, তিনি বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ শহীদের রক্ত দিয়ে তৈরি একটি অনুভূতির নাম।

পরশ বলেন, আজ আমি আপনাদের সামনে বলতে চাই, আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হচ্ছে আমি সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে দায়িত্বগুলো পালন করব। যুবলীগের একজন সভাপতি হিসেবে নয়, একজন কর্মীহিসেবে আপনাদের পাশে থেকে কাজ করব। আপনারা আমার শক্তি হবেন, আমাদের শক্তি হবেন।

তিনি বলেন, আমার বাবা মনি বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষে যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য এই সংগঠন করেছিলেন। স্বাধীনতার পর পর দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল, তা প্রতিহত করার জন্যই এই সংগঠন কাজ করছে।

যুবলীগের কংগ্রেসের দ্বিতীয়পর্বে সংগঠনটির চেয়ারম্যান পদে পরশের নাম প্রস্তাব করেন ‘সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম। চেয়ারম্যান পদে আর কোনো নাম না আসায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি মাঈনুল হোসেন খান নিখিল।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে