রোহিঙ্গা ইস্যু: গাম্বিয়ার মামলাকে ‘আশীর্বাদ’ ভাবছে মিয়ানমার!

ডেস্ক রিপোর্ট

রোহিঙ্গা
ফাইল ছবি

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের আদালতে গাম্বিয়ার মামলাকে ‘আশীর্বাদ’ হিসেবে দেখছে দেশটির সেনাবাহিনী। আগের ধারাবাহিকতায় রাখাইনের সমস্যার পেছনে স্থানীয়রা নয়, বহিরাগতরাই দায়ী বলে দাবি করেছেন মিয়ানমার সেনা মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ্য মিন তুন।

মিয়ানমার বরাবরই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে সেখানে যাওয়া অবৈধ অধিবাসী হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও তার দেশ এ বিষয়টি জোরালোভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের সেনা মুখপাত্র।

universel cardiac hospital

শুক্রবার জেনারেল জ্য মিন তুন বলেছেন, সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ঘটনায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দায়ের করা মামলায় সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতা দেবে।

আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর গাম্বিয়ার করা মামলাটির শুনানি হবে। এতে মিয়ানমারের পক্ষে দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন একটি দল লড়বে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার।

জ্য মিন তুন বলেন, ‘আমরা (সেনাবাহিনী) এই মামলাকে আশীর্বাদ হিসেবে নিয়েছি। কারণ এর মধ্য দিয়ে রাখাইনের সংকটের বিষয়টিতে মিয়ানমারের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা হাজির করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

মিয়ানমারের সেনা মুখপাত্রের দাবি, ‘২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাখাইনের কোনও স্থানীয় জনগোষ্ঠী অথবা পুলিশ-সেনাবাহিনীর দ্বারা এই সংকট সৃষ্টি হয়নি। বরং সেখানে বসবাসকারী বহিরাগতরাই এই সংকট সৃষ্টি করেছে। আর এই ব্যাপারটি আন্তর্জাতিকভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়। কেবল দলবদ্ধভাবে তাদের বাংলাদেশে প্রবেশকে গুরুত্ব দেয়া হয়। এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ আমাদের সৃষ্টি হয়েছে।’

শত-শত বছর ধরে আরাকান অর্থাৎ রাখাইনে বাস করা রোহিঙ্গাদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না মিয়ানমার। গত চার দশক ধরে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার এ জনগৌষ্ঠীর ওপর ২০১৭ সালে নতুন করে কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। নির্বিচারে হত্যা-ধর্ষণ-বাড়িঘরে আগুনের মুখে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশের দিকে ঢল নামে রোহিঙ্গাদের। আগে থেকে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের ক্যাম্পে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছেন।

২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে গত ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে গাম্বিয়া।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে