অসহায় কারাবন্দিসহ বিচারপ্রার্থীদের আইনি সুবিধা দিতে, তাদেরকে পুনর্বাসন ও সমাজে পুনর্বহাল, দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ, কারাবন্দি মাদকাসক্তদের চিকিৎসা এবং কারাবন্দিদের পরিবারকে সহায়তা ও প্রয়োজনীয় বৃত্তি প্রদান করা হবে।
এ জন্য সরকার ‘এক্সেস টু জাস্টিস থ্রু প্রিজন রিফর্মস’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উদ্যোগে কারা অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এ প্রকল্পের নথি বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে।
প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২০১ কোটি ৩৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৯৩ কোটি টাকা এবং জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন (জিআইজেড) ১০৮ কোটি ৩৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা অনুদান দেবে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে।
বরিশাল, বগুড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা, ফরিদপুর, গাইবান্ধা, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ, ঝিনাইদহ, যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, পটুয়াখালী, রাজশাহী, রংপুর, সিরাজগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, ঠাকুরগাঁও, ফেনী, নোয়াখালী, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও কক্সবাজার জেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে একটি ডিজিটাল সলিউশন তৈরির মাধ্যমে দীর্ঘদিনের অনিষ্পত্তি থাকা আপিলগুলোর বর্তমান অবস্থা ও শুনানি ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। প্যারালিগ্যাল কার্যক্রম ৩৩টি জেলায় অব্যাহত রাখা ও প্রতিষ্ঠানিকীকরণ করা। কেস কো-অর্ডিনেশন কমিটির কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও প্রতিষ্ঠানিকীকরণ করা।
কারাবন্দিদের পুনর্বাসন ও সমাজে পুনর্বহালের লক্ষ্যে ‘সাজা পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন। এর মধ্যে রয়েছে কারাবন্দিদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদান, কারাবন্দিদের সমাজে পুনর্বহাল, মাদকাসক্ত বন্দিদের চিকিৎসা এবং কারাবন্দিদের পরিবারকে সহায়তা ও প্রয়োজনীয় বৃত্তি প্রদান করা।
এছাড়াও জেল আপিল প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ডিজিটাল সলিউশন তৈরি। কারা আইন ও কারা বিধি প্রণয়নে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা। বিভিন্ন কার্যক্রমেকে সাধারণের মাঝে প্রচারের লক্ষ্যে ‘যোগাযোগ কৌশলপত্র’ প্রণয়ন করা। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা সফর করা হবে প্রকল্পের আওতায়।
এর উদ্দেশ হলো অসহায় কারাবন্দিসহ বিচারপ্রার্থীদের আইনি অভিগম্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টেকসই অংশিদারিত্ব স্থাপন ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় কারাগারকে সংশোধন পরিষেবায় রূপান্তর।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের মত, প্রকল্পে ২৮টি জেলাকে প্রকল্প এলাকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সব জেলাকে অন্তর্ভুক্ত না করে শুধু ২৮টি জেলাকে নির্বাচনের যৌক্তিকতা নিয়ে সভায় আলোচনা করা যেতে পারে।
এছাড়া কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় সরকারি অর্থায়নে ৩টি জিপ, ২টি মাইক্রোবাস, একটি মিনিবাস, একটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি পিকআপ ভ্যান সংগ্রহের সংস্থান রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে সভায় আলোচনা করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে গাড়ির চালকদের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনবল কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করা হয়নি বলেও মত দেয় কমিশন।