অস্থিরতা যেন কাটছেই না পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতার ধারাবাহিকতায় এবার আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
শীতকালীন ছুটি ও সমাবর্তনকালে আবাসিক হল খোলা রাখা, ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক চর্চায় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা না করার পরিবেশ নিশ্চিত করা, ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের মান বাড়িয়ে দাম কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে এই আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।
রবিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ‘মুক্তির গান’ শিরোনামে তৃতীয় দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বিক্ষোভে উত্তাল করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। তারা এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ থেকে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল বের করে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে মিছিলটি শেষ হয়।
‘শিক্ষার্থীবান্ধব শাবিপ্রবি চাই’ নামক মঞ্চের উদ্যোগে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিলের পাশাপাশি গোলচত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ‘প্রশাসনের প্রহসন মানি না, মানবো না’, ‘আমাদের ধমনীতে নূর হোসেনের রক্ত’, ‘স্বৈরাচার যেখানে লড়াই হবে সেখানে’, ‘স্বেচ্ছাচারের এক জবাব প্রতিরোধ প্রতিবাদ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে প্রতিবাদী গানের মাধ্যমে অবস্থান নেয়। গানের সুরে সুরে চলে তাদের এই আন্দোলন।
এসময় তারা মেয়েদের বাইরের হলে উচ্চ ভাড়া, ছুটির অজুহাতে হল বন্ধ রাখা, খাবারের মূল্যবৃদ্ধি, সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসের সব দোকান বন্ধ রাখা, বিভিন্ন র্যাগ ডে ও ডিপার্টমেন্টাল ওরিয়েন্টেশনসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের অনুমতি না দেয়া, গ্রাফিতি-রোড পেইন্টিংয়ের মতো সৃজনশীল কর্মসূচি বন্ধ রাখাসহ মোট ২৫টি দাবি তুলে ধরেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘যেকোনো সিদ্ধান্তে প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দিনদিন ছাত্রদের অধিকার খর্ব হচ্ছে। বিভিন্ন বিধি নিষেধের কারণে বিকাল ৫টার পরে ক্যাম্পাস আর জমজমাট থাকে না। যার ফলে ক্যাম্পাসে দিনদিন ছিনতাইকারীদের উপদ্রব বেড়েই চলেছে।’ প্রশাসনের হল বন্ধের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত দ্রুত বাতিলের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, ৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উপলক্ষে শীতকালীন ছুটি পিছিয়ে ৫ থেকে ১৬ জানুয়ারি করে সিন্ডিকেট।
গত বুধবার হল খোলা রাখার দাবিতে মানববন্ধনে ‘অনুমতি’না নেয়ার অজুহাতে বাধা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ। এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলার পাশাপাশি এক শিক্ষার্থীর ফোন জব্দ করে নেন তিনি। পরদিন বৃহস্পতিবার প্রক্টরের এই আচরণকে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী আখ্যায়িত করে পুনরায় আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।