গ্যাস দুর্ঘটনা : ১০ বছরে নিহত ৫০০

মত ও পথ প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে গ্যাস লাইনের রাইজার বিস্ফোরণে নিহত ৭
ফাইল ছবি

দেশজুড়ে গ্যাস বিস্ফোরণে দুর্ঘটনা ও এতে হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ১০ বছরে সারা দেশে গ্যাস বিস্ফোরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৫০০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার।

এর মধ্যে চলতি বছরই এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন শতাধিক। ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস, বিস্ফোরক পরিদফতর ও বিভিন্ন হাসপাতালের তথ্য থেকে এ সংখ্যা বেরিয়ে এসেছে।

গ্যাস বিস্ফোরণে নিহতের ঘটনা চলতি বছর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সারা দেশে জানুয়ারি থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত গ্যাস বিস্ফোরণ সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন শতাধিক। আহত হয়েছেন কমপক্ষে দু’শ জন।

এর মধ্যে বছরের শুরুতে রাজধানীর পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারান ৮১ জন।

ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিনজন, এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণে দু’জন, অক্টোবরে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে বেলুন বিক্রির সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সাত শিশু ও মানিকগঞ্জে একই পরিবারের তিনজন নিহত হন।

সর্বশেষ ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় নিহত হয়েছেন সাতজন।

বিস্ফোরক পরিদফতর বলছে, গত ১০ বছরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ সংক্রান্ত ৯ শতাধিক দুর্ঘটনায় দেড় হাজার লোক হতাহত হয়েছেন। বছরে গড়ে ৫-৬টি বড় ধরনের গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

বিস্ফোরণে বছরে গড়ে নিহত হন ৫০-৬০ জন। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে গ্যাস দুর্ঘটনাজনিত অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে ১৫৬টি। ২০১৬ সালে গ্যাসজনিত দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৬-এ। ২০১৭ সালে প্রায় ১৫০টি।

তবে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে গ্যাসের চুলা থেকে সৃষ্ট দুর্ঘটনার সংখ্যা ২৩৮টি, আর গ্যাস লিকেজের জন্য ঘটেছে ৫ হাজার ৬৫০টি দুর্ঘটনা।

২০১৮ সালে ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অবশ্য তিতাসের পরিসংখ্যানকে সমর্থন করে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, গত বছর চুলার আগুন থেকে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ৪৪৯টি।

অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যাওয়াদের তথ্য ফায়ার সার্ভিসের কাছে না থাকায় হতাহতদের প্রকৃত সংখ্যা জানাতে পারেনি তারা।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্র জানায়, সারা দেশ থেকে গড়ে প্রতি মাসে ৫০০ জন আগুনে পোড়া রোগী ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হচ্ছেন। মারা যাচ্ছেন এক-পঞ্চমাংশ রোগী।

ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৪০ শতাংশই গ্যাসের আগুনে দগ্ধ। দেশের অন্যান্য হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাচ্ছেন অনেক দগ্ধ রোগী।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে