বিআরটিএ : ভোগান্তিতে সেবাপ্রার্থীরা, কর্মকর্তারা কর্মক্লান্ত!

মত ও পথ প্রতিবেদক

বিআরটিএ : সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তি
ফাইল ছবি

সম্প্রতি সড়কে নতুন আইন কার্যকর করার পর থেকে রাজধানীসহ দেশের সকল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অফিসগুলোতে ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির লাইসেন্স, মালিকানা পরিবর্তনের জন্য গ্রাহকদের ভিড় বেড়েছে কয়েকগুন।

হঠাৎ এ অতিরিক্ত চাপে ভোগান্তিতে পড়েছেন যেমন সেবাপ্রার্থীরা, আবার কর্মকর্তারাও নির্ধারিত সময়ের বেশি সেবা দিতে গিয়ে কর্মক্লান্ত হয়ে পড়ার কথা বলছেন।

universel cardiac hospital

এ অবস্থায় নতুন সড়ক আইন প্রয়োগে বিআরটিএ প্রকৃতপক্ষে কতটুকু কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে, সেটা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে সেবা পেতে আসা সাধারণ গ্রাহকরা।

বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ (মিরপুর) এ আজ মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ কক্ষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফাঁকা থাকে। কক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অন্যান্য কাজ করতে চলে যাচ্ছেন। আর সেবা পেতে আসা গ্রাহকরা সেই কক্ষের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছেন একটা স্বাক্ষরের আশায়।

সকাল সাড়ে ৯টায় বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ (মিরপুর) এ মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তন করতে এসেছেন মোহাম্মদ সাঈদ হাসান। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও তিনি তা পরছেন না।

তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সকাল সাড়ে ৯ টায় আমি আশুলিয়া থেকে এখানে এসেছি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও দলিল ভালোভাবে লিখে এনেছি। কিন্তু আসার পর থেকেই দেখছি, অনেক ভিড়। ভিড়ের মধ্যে কাজ করা অনেক কঠিন জেনেও আমি ২০৭ নাম্বার রুমে সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের কাছে যাই কাগজ নিয়ে।

তিনি আমাকে বলেন, নিচে গিয়ে ১০১ নাম্বার রুমে গিয়ে কথা বলতে। কিন্তু সেখানে গিয়ে রুমে কাউকেই পাইনি। প্রায় দুই ঘণ্টা পরে সেই রুমের কর্মকর্তা এসে বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক নেই, পুনরায় লিখে আনতে হবে।

হতাশ হয়ে তিনি আরও বলেন, দুই ঘণ্টা পরে এসে যদি বলেন কাগজপত্র ঠিক নেই, তাহলে আপনার অবস্থা কী হবে, বলেন? পরে পুনরায় সব কিছু ঠিকঠাক করে গিয়ে দেখি, সেই কর্মকর্তা আবারো তার রুমে নেই। তিনি নাকি লাঞ্চ করতে গেছেন!

কথা হয় বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) মো. ফারহানুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, গাড়ির মালিকানা পরিবর্তনের আবেদনে আমরা স্বাক্ষর দেই মাত্র তিন জন লোক। আবার মাঝে মাঝে কারো কারো হেড অফিসে যেতে হয় কাজের জন্য। তখন আসলে চাপ সামাল দেওয়া অনেক কষ্টের। জনবল কিছুটা কম থাকায় মাঝে মাঝে গ্রাহকদের অপেক্ষা করতে হয়। তবে আমরা চেষ্টা করি, অতি দ্রুত গ্রাহকদের সেবা প্রদানে। আর নতুন সড়ক আইন হওয়ার পর থেকে চাপ অনেকগুন বেড়েছে।

বিআরটিএ’র উপ-পরিচালক (ইঞ্জি.) শফিকুজ্জামান ভূঞা বলেন, নতুন সড়ক আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে আমাদের এখানে অনেক বেশি চাপ বেড়েছে। যা সামাল দিতে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হিমশিম খাচ্ছেন। তবে আমাদের এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের অফিস করানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের যে জনবল দরকার, এই মর্মে আমরা গত সপ্তাহে চেয়ারম্যান মহোদয়কে আমাদের ডিভিশন অফিসের মাধ্যমে একটি চিঠি দিয়েছি। আসা করছি, অতি শিগগিরই জনবল পেয়ে যাব। তবে যে জনবল আছে, আমরা স্বদিচ্ছা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে