ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে সংগতি রেখে শুরু হয়েছে দুদিনব্যাপী “১৬ ডেজ অব অ্যাকটিভিজম- অরেঞ্জ দ্যা ওয়ার্ল্ড” ক্যাম্পেইন। এ ক্যাম্পেইন থেকে নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে প্রতিটি ওয়ার্ডে আজ থেকে কমপ্লেইন বক্স দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম।
মেয়র বলেন, মাসে একবার করে সেগুলো খোলা হবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। অভিযোগকারী নারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে। এভাবে সবাইকে নিয়েই আমরা আমাদের বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তুলব।
আতিকুল ইসলাম বলেন, নারী ও বিশেষ সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এবং তাদের অধিকার নিশ্চিতে এই কর্মসূচি ১৯৯১ সাল থেকে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয়ে আসছে। সেন্টার ফর ওমেন্স গ্লোবাল লিডারশিপ এই কর্মসূচির অন্যতম আয়োজক। বিশেষ সুবিধাবঞ্চিত নাগরিকদের জন্য কাজ করছে ডিএনসিসি।
তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় আওতাধীন সকল দোকানে আগামী ছয় মাসের মধ্যে র্যামপ লাগাতে হবে যেন হুইলচেয়ারে করে মানুষজন দোকানে প্রবেশ করতে পারে। নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে প্রতিটি ওয়ার্ডে আজ থেকে কমপ্লেইন বক্স দিচ্ছি আমরা। মাসে একবার করে সেগুলো খোলা হবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। অভিযোগকারী নারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে। এভাবে সবাইকে নিয়েই আমরা আমাদের বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তুলব।
নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে সচেতনতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর ২৫ নভেম্বর “নারী নির্যাতন বিলোপ দিবস” থেকে ১০ ডিসেম্বর “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস” পর্যন্ত ১৬ দিনব্যাপী এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
রাজধানীর গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠে আজ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) ও কাল শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুদিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত এই ক্যাম্পেইনের আওতায় নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ আকবর পাঠান ফারুক, এ কে রহমত উল্লাহ, অপরাজিতা হক, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. জাবেদ পাটোয়ারী, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ ডিএনসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, ঢাকায় নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিদসেল ব্লেকেন এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূত চারলতা স্কলাইটার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বিশ্বব্যাপী এই কর্মসূচি উদযাপিত হয়ে আসছে। নিরাপদ পরিবেশ এবং নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এমন সচেতনতামূলক উদ্যোগের মাধ্যমে নারীদের জন্য সুন্দর নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
দেশে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে শক্তিশালী আইনি কাঠামো আছে বলেও উল্লেখ করেন স্পিকার।
সম্প্রতি নুসরাত হত্যা মামলার রায়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে এবং সহিংসতা হয়ে গেলে তার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আমাদের শক্তিশালী আইনি কাঠামো রয়েছে। তিনি বলেন, অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারলে শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে নারীর প্রতি সহিংসতা আরও কমে যাবে। এর জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। নারী এবং দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, এসডিজি বা সাসটেইনেবল উন্নয়ন অর্জন করতে হলে প্রয়োজন সাসটেইনেবল পিস। সাসটেইনেবল পিস এর জন্য চাই সাসটেইনেবল সিকিউরিটি। সেই সিকিউরিটি নিশ্চিতই কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। আর নারীদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা আপসহীন।