মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ কবে তৈরি হবে, সেই সময়সূচি নির্ধারণ করা খুব কঠিন বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
এছাড়া রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য ইতিবাচক পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারকে সমর্থনের লক্ষ্যে দেশটির সঙ্গে কাজ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন ইউএনএইচসিআরের উপ-হাইকমিশনার কেলি টি ক্লেমেন্টস। বাংলাদেশে চার দিনের সফর শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রোহিঙ্গাদের প্রশ্নে বাংলাদেশের অব্যাহত উদারতার প্রশংসা ও সংকটের সমাধানে তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের সংহতিকে উৎসাহিত করেন।
ক্লেমেন্টস বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সময়সূচি (রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার সহায়ক পরিবেশ কখন তৈরি হবে) নির্ধারণ করাটা খুবই কঠিন। এক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে।
তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইউএনএইচসিআর ও অন্যান্য অংশীদারি সংস্থার কাজ চালিয়ে যাওয়ার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন, যাতে রোহিঙ্গাদের দক্ষতা ও সক্ষমতার উন্নয়নে সহায়তা হয়।
২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে বিদ্রোহী গ্রুপের হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তাদের বেশ কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়। হামলাকারীদের আশ্রয় দেয়ার অজুহাতে ২৪ আগস্ট রাতে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর স্মরণকালের ভয়াবহ বর্বরতা শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী মগরা (বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা)। চলে গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ বিভৎস সব নির্যাতন। এতে প্রাণ রক্ষায় দলে দলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা।
মানবিকতার কারণে বাংলাদেশ সরকার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের সীমান্তপথ খুলে দিয়ে নিপীড়িত প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়। সীমান্তের দুই উপজেলার প্রায় ৮ হাজার একর পাহাড়ি বনভূমিতে আশ্রয়স্থল তৈরি করে ৩৩টি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে নতুন পুরনো প্রায় সোয়া ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে।
- আরও পড়ুন >> শনিবার শেষ হচ্ছে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন
- আরও পড়ুন >> কারাগার থেকে এসেছে দুই জঙ্গির মাথায় ‘আইএস টুপি’
কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় তাদের প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া চালানো হয়। কিন্তু দফায় দফায় চেষ্টা করেও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। গত বছরের শেষ সময়ে এবং চলতি বছরের শুরুতে প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা দিলেও কথা রাখেনি মিয়ানমার।