চুক্তি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর জবাব না পাওয়ায় তথ্য অধিকারের আশ্রয় নেবে বিএনপি

মত ও পথ প্রতিবেদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছে সেগুলো জনগণের কাছে খোলাসা করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছিল।

ওই চিঠির এখন পর্যন্ত কোনো জবাব না পাওয়ায় তথ্য অধিকার আইনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবে বিএনপি। আগামী দুই একদিনের মধ্যে এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে দলটি।

আজ শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিকালে শুরু হওয়া স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে যে সকল চুক্তি হয়েছে এসব বিষয়ে জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা একটি চিঠি দিয়েছিলাম। আমরা সাত দিনের বেশি সময় অপেক্ষা করেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোনো রেসপন্স পাইনি। সে কারণে আমাদের পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা তথ্য অধিকার আইনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসব বিষয়ে জানতে চেয়ে একটি চিঠি দেব। আগামী দুই-একদিনের মধ্যেই আমরা চিঠিটি দেব।

আগামী ৫ ডিসেম্বর শুনানিতে বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশা করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে তারা ইতিমধ্যে উনার শারীরিক অবস্থা অনেকটা ক্রিটিকাল মোমেন্টে আছে বলে জানিয়েছেন। তিনি দিন দিন পঙ্গুত্বের দিকে যাচ্ছেন। তারা আরও বলেছেন, ম্যাডামের আরও ভালো চিকিৎসা দরকার।

ফখরুল বলেন, আপনার জানেন আমরা ইতিমধ্যে উনার জামিনের জন্য কোর্টে আবেদন করেছি। কোট ইতিমধ্যে মেডিকেল বোর্ডের কাছে উনার মেডিকেল রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা বলেছে। আমরা আশা করি ম্যাডামের চিকিৎসার জন্য যে বোর্ড গঠন করা হয়েছে তারা কোনো চাপে না পড়ে বেগম খালেদা জিয়ার শরীরের চিকিৎসার সঠিক রিপোর্ট কোর্টে জমা দেবেন। আমরা আশা করি তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।

নির্বাচন কমিশনের সব দুর্নীতির তদন্ত করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত। সংবিধানকে লঙ্ঘন করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং সচিব নির্বাচন কমিশনে লোক নিয়োগ দিচ্ছেন। কারণ কমিশনের সব বিষয়ে সবার একমত হতে হয়। কিন্তু তারা কারো মতের তোয়াক্কা না করে নিজেরাই লোক নিয়োগ দিচ্ছেন।

ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের এই বিভক্তিতে প্রমাণ হয় যে, তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আমি মনে করি তাদের দুর্নীতি তদন্ত হওয়া দরকার। কারণ কমিশনের যা হচ্ছে এগুলার দুর্নীতির অংশই মনে করছে সাধারণ মানুষ। তাই আমরা মনে করি দুর্নীতি দমন কমিশনের নিজ উদ্যোগে নির্বাচন কমিশনের দুর্নীতির তদন্ত করা উচিত।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন দেশের সকল দ্রব্যমূল্য এখন আকাশচুম্বী হয়েছে। মানুষ এতে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছে। দিন দিন সকল কিছুর দাম বেড়ে চলছে। তাই আমি মনে করি এই সরকারের এসব ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত। আর আমরা এই বিষয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিস্তারিত একটি কনফারেন্স করব।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে