পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ার্নারের দুর্দান্ত ট্রিপল সেঞ্চুরি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ট্রিপল সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর শূন্যে উড়াল দিলেন ডেভিড ওয়ার্নার
ট্রিপল সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পর শূন্যে উড়াল দিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। ছবি: এএফপি

প্রথম দিনই ডাবল সেঞ্চুরির সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিং তারকা ডেভিড ওয়ার্নার। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে অ্যাডিলেড ওভালে দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে অবিশ্বাস্য ব্যাটসম্যানশিপের পরিচয় দিয়ে ‘ট্রিপল সেঞ্চুরি’ তুলে নেওয়া ওয়ার্নার এগিয়ে যাচ্ছিলেন ব্রায়ান লারার রেকর্ড ভাঙার পথেই। কিন্তু ৩৩৫ রানে অপরাজিত থাকতে অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ঘোষণা করায় সুযোগটা আর পাননি এ ওপেনার।

১৬৬ রানে অপরাজিত থেকে প্রথম দিন শেষ করেছিলেন ওয়ার্নার। ডাবল সেঞ্চুরি পেতে আজ তাঁর লেগেছে মাত্র ৩২ বল। এরপর ট্রিপল সেঞ্চুরি তুলে নিতে খেলেছেন ১২৯ বল। সেশন ধরে ধরে ব্যাট করে যাওয়ার এমন দুর্দান্ত নজির বেশ কিছুদিন পরই দেখা গেল টেস্ট ক্রিকেটে। এ সংস্করণে ওয়ার্নারের আগে সবশেষ ট্রিপল সেঞ্চুরি ২০১৬ সালে ভারতের করুণ নায়ারের। ৩ উইকেটে ৫৮৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া।

ডাবল সেঞ্চুরির পর শূন্যে লাফিয়ে চিরাচরিত উদযাপনের পর আকাশে তাকিয়ে স্মিত হেসেছেন ওয়ার্নার। পাঁচ বছর আগে না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ওপেনার ফিলিপ হিউজকে তা উৎসর্গ করেছেন সম্ভবত। ট্রিপল পাওয়ার পরও একইভাবে উদযাপন করেছেন ওয়ার্নার। হিউজের জন্মদিনে এর চেয়ে ভালো ‘উপহার’ আর কী হতে পারে! সত্যি বলতে অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ঘোষণা না করলে হিউজ হয়তো ‘৪০০’ রানও উপহার হিসেবে পেতে পারতেন। ওয়ার্নার যেভাবে ব্যাট করছিলেন তাতে পাকিস্তান দলকে দেখে মনে হয়েছে আক্রমণ নয় তারা অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ঘোষণার অপেক্ষায়!

টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস এখন ওয়ার্নারের (৯ ঘণ্টার বেশি ব্যাট করে ৪১৮ বলে ৩৩৫ ; ৩৯ চার ও ১ ছক্কা)। ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩৮০ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাথু হেইডেন।

দিবারাত্রির টেস্টে এটি দ্বিতীয় ট্রিপল সেঞ্চুরির নজির। এর আগে ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুবাইয়ে দিবারাত্রির টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন বর্তমান পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলী। টেস্টে এটি দশম সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। তবে অপরাজিত ট্রিপল সেঞ্চুরি হিসেব করলে ব্রায়ান লারা (৪০০*), গ্যারি সোবার্স (৩৬৫*) ও ওয়ালি হ্যামন্ডের (২২৬*) পরই ওয়ার্নারের ইনিংসটি।

ব্রিসবেন টেস্টে ১৫৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ওয়ার্নার। অ্যাডিলেডে পরের ইনিংসেই ওয়ার্নারের এই ট্রিপল সেঞ্চুরি এ মাঠে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানও। যেখানে তিনি পেছনে ফেলেছেন ১৯৩২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্র্যাডম্যানের ২৯৯ রানের ইনিংসকে। এর আগে ১৯৩০ সালে লিডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। ওয়ার্নার আজ অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তির ‘আইকনিক’ ইনিংসটি টপকে যাওয়ার পরই নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। সপ্তম অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে ট্রিপলের মুখ দেখা এ ব্যাটসম্যান দীর্ঘ আট বছর পর অস্ট্রেলিয়ানদের দারুণ এক মুহূর্তও এনে দিয়েছেন। ওয়ার্নারের আগে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান হিসেবে সবশেষ ট্রিপল সেঞ্চুরি ২০১১ সালে মাইকেল ক্লার্কের।

ওয়ার্নারকে আউট করতে না পারার দায়টা পাকিস্তানের বোলাররা এড়াতে পারবেন না। ওয়ার্নারকে আউট করলেও সেটি ছিল ‘নো বল’। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ চার টেস্টে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ওয়ার্নারকে ‘নো বল’-এ আউট করল পাকিস্তান। কিন্তু তাতে যেহেতু কোনো লাভ হয়নি তাই দায়টা কিন্তু বোলারদেরই।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে