শিশুটিকে পেতে সব সম্পত্তি লিখে দিতে চান এক দম্পতি!

রংপুর প্রতিনিধি

রংপুরে উদ্ধার হওয়া নবজাতক
ছবি : সংগৃহিত

রংপুরের হাজীরহাট থানা এলাকার হজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকটি (ছেলে) এখন পুলিশ হেফাজতে।

আজ রোববার সকালে ওই নবজাতককে স্থানীয় এক নারী উদ্ধার করে তার শ্বশুরকে জানালে তিনি শিশুটি হাজিরহাট থানায় নিয়ে যান।

universel cardiac hospital

নবজাতককে থানায় নেয়া হলে অনেকেই দেখার জন্য থানায় ভিড় জমান।

পরে নবজাতককে রমেক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বিকেলে রংপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ পাঠানো হয়।

ফুটফুটে নবজাতকটি কী অপরাধ করেছিল, কেন তাকে মহাসড়কের পাশে ফেল রাখা হলো, কোন পাষণ্ড এমন কাজ করল? এমন হাজার প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে এ নবজাতককে ঘিরে।

অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নবজাতকটিকে দত্তক চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তারাগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কুর্শা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. কামরুজ্জামান।

সন্ধ্যায় আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলম নবজাতককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাজিরহাট থানা পুলিশের ওসি, জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি ও সমাজসেবা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়। আবেদনের শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ আগামী ১০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

আদালত চত্বরে কামরুজ্জামান বলেন, আমার ১৭ বছরের বিবাহিত জীবন। আমার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের কোনো সন্তান নেই। বহু চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু সন্তান হয়নি। রাস্তার পাশে পাওয়া নবজাতককে দত্তক চেয়ে আদালতে আবেদন করেছি। প্রয়োজনে আমি আমার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি। আদালত আমার দায়িত্বে নবজাতককে দিলে আমি অন্য আর দশজন বাবার মতোই এ সন্তানকে মানুষ করব।

হাজিরহাট থানা পুলিশের ওসি মোস্তাফিজার রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, নবজাতকের বয়স আনুমানিক এক থেকে দুদিন হবে। তাকে কেন রাস্তার পাশে এভাবে ফেলে রাখা হলো এ বিষয়টি পুলিশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে। তদন্ত করা হচ্ছে কেন এ ফুটফুটে শিশুটিকে অমানবিকভাবে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হলো?

তিনি আরও বলেন, আমরা শিশুটি উদ্ধার করে প্রথমে চিকিৎসার জন্য রমেক হাসপাতালে পাঠাই। সেখান থেকে শিশুটিকে কোথায় রাখা হবে এ সিদ্ধান্তের জন্য আদালতে পাঠানো হয়। আদালত শিশুটির সুচিকিৎসার জন্য রমেক হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে একটি জিডি করা হয়েছে বলেও ওসি জানান।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে