ট্যাংকলরি ধর্মঘট দ্বিতীয় দিনে: ভোগান্তি চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্যাংকলরি

তেল বিক্রির কমিশন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে জ্বালানি তেল বিক্রি দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগে।

এদিকে অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের ফলে প্রথম দিনে রোববার যানচলাচলে তেমন প্রভাব না পড়লেও আজ (সোমবার) থেকে প্রায় অচল হয়ে যেতে পারে তিন বিভাগের সড়কপথ। সেই সঙ্গে বিপর্যস্ত হবে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা। তেল উত্তোলন করতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সব ধরনের পরিবহন চালকরা। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। আজও ট্যাংকলরিগুলোকে ডিপো ও বিভিন্ন পেট্রলপাম্পের সামনে অলসভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

universel cardiac hospital

ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে তিন বিভাগে তেল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটবে। এতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন ছাড়াও কৃষিজমিতেও পানি সেচ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে পেট্রলপাম্প বন্ধের সুযোগে অতিরিক্ত দামে খোলা তেল বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে ধর্মঘটের কারণে ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা নেই বলে দাবি করেছেন বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রমেশ চন্দ্র ঘোষ।

তিনি জানান, বেশিরভাগ বাস ঢাকা থেকে তেল নিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে গিয়ে আবার ঢাকায় ফিরে আসতে পারে। তবে পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁওয়ের মতো বেশি দূরত্বের দু-একটি গন্তব্যে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, ১৫ দফা দাবি পূরণে সরকারকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা দাবি না মানায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ধর্মঘট শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।

তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক অমীমাংসিত দাবিসমূহ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা টালবাহানা করছে। বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। ফিলিং স্টেশন তথা জ্বালানি ব্যবসায়ীদের ওপর অযথা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন দফতর থেকে বিভিন্ন ধরনের বিধান। যা মেনে নিয়ে জ্বালানি ব্যবসা আদৌ সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে জ্বালানি ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খুলনা বিভাগের সব জেলায় এবং বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয় খুলনার দৌলতপুর ডিপো থেকে। আর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে তেল সরবরাহ করা হয় সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে। ধর্মঘটের কারণে এই দুই স্থানে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তেল ডিপো থেকে গতকালের মতো আজও তেল উত্তোলন, বিপণন ও পরিবহন বন্ধ রয়েছে।

মাগুরার মেসার্স জামান দত্ত ফিলিং স্টেশনের মালিক সঞ্জয় দত্ত জানান, বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ১৫ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগের সব পাম্পে রোববার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু হয়েছে। চলমান ধর্মঘটের কারণে সাধারণ গ্রাহকরা ভোগান্তির শিকার হলেও আমরা ব্যবসায়ীরাও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, তাই ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছি।

মেহেরপুর মাম্প মালিক সমিতির সভাপতি নুর হোসেন আঙ্গুর জানান, এটি কেন্দ্রের সীদ্ধান্ত। আজ (২ ডিসেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠকে বসবেন। সেখান থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলে তেল বিক্রয় শুরু হবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে