ভাসানচরের পরিস্থিতি দেখতে আসছে জাতিসংঘের কারিগরি দল

মত ও পথ প্রতিবেদক

ভাসানচর
ফাইল ছবি

জাতিসংঘের একটি কারিগরি দল কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য প্রস্তুত করা ভাসানচরের পরিস্থিতি দেখতে আসছে। এ লক্ষ্যে চলতি মাসের শেষেই দলটি বাংলাদেশে আসছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক।

আজ সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন-ডিক্যাব সদস্যদের সঙ্গে ‘এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগর ও ইউরোপে বিকশিত জোট : বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং বিকল্প’ বিষয়ক ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।

universel cardiac hospital

তিনি বলেন, জাতিসংঘ বেশ কিছুদিন ধরে এই ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে। একটা টেকনিক্যাল টিম আছে এবং সেই টেকনিক্যাল টিমের ভাসানচর যাওয়ার কথা। ওখানে কিছু জিনিস তারা নিশ্চিত করতে চান এবং করার পর এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করছে। তাছাড়া এই বিশাল জনসংখ্যার চাপে বিপাকে রয়েছেন স্থানীয়রা।

এ প্রেক্ষাপটে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার বিরান দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের এই পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সেখানে নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ হাজার একর আয়তনের ওই চরে তাদের জন্য বসবাসের ব্যবস্থাও করছে বাংলাদেশ। কিন্তু সাগরের ভেতরে ওই চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ মাসের মধ্যে হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ওয়েদার রিলেটেড একটা প্রশ্ন আছে। আপনারা জানেন, মাঝখানে ওয়েদার একটু প্রতিকূল হয়ে গেছিল, সেটা বোধ হয় এখন অনুকূল হয়েছে।

শহীদুল হক বলেন, টেকনিক্যাল টিমের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে, তারা কম্পোজিশান দিয়েছে, কী দেখতে চান, আমরা মোটামুটি এই জিনিসটা এগিয়ে এনেছি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের বিচার- দুটি ‘অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত’। কারণ এর আগেও মিয়ানমারের অত্যাচারে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হয়েছে। ১৯৭৭-৭৮ সালে হয়েছে, নব্বইয়ের প্রথম দিকে হয়েছে।

তিনি বলেন, একই রোহিঙ্গারা- তারা গেছেন এবং ফিরে এসেছেন। তাদের এই প্রত্যাবর্তনটা যাতে টেকসই হয়, আর ফিরে না আসে, তার জন্য অ্যাকাউন্টেবিলিটি ইজ ক্রিটিক্যাল। বিচার ও ফিরে যাওয়া একটা আরেকটার পরিপূরক।

মিয়ানমারের বিচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তৎপরতা রোহিঙ্গা সংকটের দ্বিপাক্ষিক সমাধান চেষ্টা ব্যাহত করবে কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের যে পলিসি, দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যখন বক্তব্য রেখেছেন, তখনই আমরা জাতিসংঘে এটা নিয়ে গেছি। মিয়ানমার তখন থেকে জানে যে, আমরা দুই ফ্রন্টে চেষ্টা করছি। এই দুটা একটা আরেকটার পরিপূরক।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে