পররাষ্ট্র সচিব (এশিয়া ও প্যাসিফিক) মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত পেতে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে ফিলিপাইন। তবে শিগগিরই এই চুরি হওয়া বাকি অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় ফিলিপাইনের সঙ্গে সচিব পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ১০ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে সাড়ে ছয় কোটি ডলার এখনো উদ্ধার করা যায়নি বলে জানা গেছে।
বৈঠকে আলোচনার বিষয় নিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে কথা হয়েছে। ফিলিপাইন বলেছে, চুরি হওয়া অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। তবে শিগগিরই অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভবনা কম।’
তিনি বলেন, ‘একটা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় সব ধরনের সহযোগিতা করবে ফিলিপাইন।’
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে নেয় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে দুই কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কা এবং আট কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে এখন পর্যন্ত ফেরত এসেছে এক কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার। বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার ফেরত পাওয়া যায়নি।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আর কিছু টাকা এখনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমরা ধাপে ধাপে এগুচ্ছি। ফিলিপাইন থেকে কিছু টাকা পাচার হয়ে গেছে। ওদের দেশে তদন্ত চলছে বিভিন্ন পর্যায়ে।’
এই অর্থ কবে নাগাদ ফেরত আসতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়া সবসময় একটু লম্বা হয়। আমরা চেষ্টা করছি। এটি সাইবার ক্রাইম। আমরা তাদের বলেছি, যেকোনো দেশ এই ক্রাইমের শিকার হতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা এবং ম্যানিলা যদি একসঙ্গে কাজ করে সমাধান করতে পারে, তবে এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আশা করি, এই ফিন্যান্সিয়াল তথ্য এবং আইডেন্টিটির বিষয়গুলো নিষ্পত্তি হয় তাহলে বাংলাদেশে যে মামলা চলছে, তার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিতে সুবিধা হবে।’
বৈঠকে ফিলিপাইন আরসিবিসি ব্যাংককে ২০ মিলিয়ন ডলার জরিমানার প্রসঙ্গ টেনে মোমেন বলেন, ‘ফিলিপাইন আরসিবিসি ব্যাংককে ২০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করেছে। এই টাকাটাও বাংলাদেশকে দেয়ার ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা চলছে। তবে তারা এ বিষয়ে কিছুটা দ্বিমত প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে ওদের (ফিলিপাইনের) অন্যরকম যুক্তি আছে।’
বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আসিয়ানভুক্ত দেশ ফিলিপাইনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান মোমেন।
বৈঠকে ফিলিপাইনের সঙ্গে কৃষি, অভিবাসন, স্বাস্থ্যসহ কয়েকটি সমঝোতা চুক্তি হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের অভিবাসন সেক্টর নিয়ে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।