আজ শনিবার বিকাল ৪টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ-এর নতুন ভবনের কাউন্সিল হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা-এর গুণীজন সংবর্ধনা-২০১৯। অনুষ্ঠানে তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, সাবেক কেবিনেট সচিব, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আকবর আলি খানকে ‘সম্মাননা’ প্রদান করা হয়।
সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে ড. আকবর আলি খান বলেন, আপনারা আমাকে যে সংবর্ধনা দিয়েছেন তাতে আমি আবেগ আপ্লুত। এর দ্বারাই প্রমাণ করে আপনারা আমাকে কতটা ভালোবাসেন।
তিনি বলেন, আসলে আমাকে যখন কেউ গালি দেয় তখন আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছে করে। কারণ এর জবাব আমাকে দিতে হবে, এটার মোকাবেলা করতে হবে। আবার যখন সবাই প্রশংসা করেন তখন মনে হয় আমার দিন বোধহয় ফুরিয়ে এসেছে; আমার বোধহয় আর কিছু করার নেই। আমি আপনাদের কাছে দোয়া প্রার্থনা করি।
ড. আকবর আলি খান বলেন, আমি আগেও এই সমিতির সাথে জড়িত ছিলাম এবং এখন যদিও আসতে পারি না কিন্তু মনে মনে আপনাদের প্রতি আমার শুভ কামনা সব সময়ই থাকে। আমি আশা করছি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর জন্য সুফল নিয়ে আসবে।
গুণীজন সংবর্ধনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কলামিস্ট, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি সাংস্কৃতিক জেলা । বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী বললে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকেই মানুষ বলে। সারা পৃথিবীর মানুষ ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আলাদাভাবে চিনে। কারণ সেখান থেকে এমন কৃতী সন্তান বেরিয়েছেন, যারা শুধু দেশের ভিতরেই খ্যাতি অর্জন করেননি, সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশকে এবং ভারতবর্ষকে উজ্জ্বল করেছিলেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, আকবর আলি খানের সংবর্ধনা সভাটি আমার কাছে একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান বলে মনে হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের গুরুত্ব ও মহত্ব অন্য যেকোনো অনুষ্ঠানের চেয়ে বেশি। ড. আকবর আলি খানের সংবর্ধনায় দল, মত, নির্বিশেষে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আপনারা তাঁর প্রতি যেভাবে গভীর ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন তা অন্য আর কোনো অনুষ্ঠানে দেখিনি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপিকে একজন ব্যতিক্রমধর্মী মানুষ হিসেবে অভিহিত করে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বাংলাদেশে এখন জ্ঞান চর্চার একটা দুর্ভিক্ষ চলছে। বর্তমানে গুণীজনদের সেভাবে আর মূল্যায়ন করা হয় না। উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী একজন ব্যতিক্রমধর্মী মানুষ। অনেকদিন থেকে তাকে আমি জানি। তিনি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ জানে কীভাবে গুণী মানুষকে কদর করতে হয়। আমি আশা করব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ এই ঐতিহ্য সমুন্নত রাখবে।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোকতাদির চৌধুরীর প্রচেষ্টায় নতুন একটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি মনে করি, সেটি বাংলাদেশের একটি ব্যতিক্রমধর্মী গবেষণামূলক বিশ্ববিদ্যালয় হবে।
- আরও পড়ুন >> বঙ্গবন্ধুকে ‘ডক্টর অব ল’ সম্মাননা দেবে ঢাবি
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট মো: কামরুল ইসলাম এমপি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি ড. আকবর আলি খানকে উদ্দশ্য করে বলেন, আমরা এই প্রথম সমিতির পক্ষ থেকে কোনো গুণী ব্যাক্তিকে সম্মাননা দিচ্ছি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বর্তমানে আপনার একটি ভিন্ন অবস্থান আছে, আপনাকে সম্মাননা জানিয়ে আমরা নিজেরাই সম্মানিতবোধ করছি।