মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের আটক রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি, যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ও দমন-পীড়ন বন্ধের দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব ওঠেছে। প্রস্তাবে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল রিপাবলিকানের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য স্টিভ ওয়াটকিন্স ও ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রমীলা জয়পাল প্রস্তাবটি পেশ করেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক প্রমীলা জয়পালের ওই প্রস্তাবে শিগগিরই জম্মু-কাশ্মীরের আটক রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ চালু-সহ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ও কাশ্মীরের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বানও জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কাশ্মীরে যে সব রাজনৈতিক নেতাকে আটক করা হয়েছে, তাদের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বন্দিদের বিনাশর্তে মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। শর্ত হিসাবে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করা বা ভাষণ না দেয়ার বন্ডে সই করানোও বন্ধ করতে হবে।
প্রতিনিধি পরিষদের ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পর্যবেক্ষক এবং দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের জম্মু ও কাশ্মীরসহ ভারতে স্বাধীনভাবে যাতায়াতের অনুমতি দিতে হবে। ধর্মীয় সংঘাত কিংবা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত বন্ধ করতে হবে।
গত কয়েক মাসে মার্কিন কংগ্রেসের দুই দল ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানের সদস্যরা কাশ্মীরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। গত অক্টোবরে ডেমোক্র্যাট দলীয় সদস্য ক্রিস ভ্যান যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কাশ্মীর উপত্যকা সফরে গিয়ে ভারত সরকারের বাধার মুখে পড়েছিলেন বলে অভিযোগে করেন।
এরপর বিচ্ছিন্ন জম্মু-কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে দু’বার আলোচনা হয়। তবে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের এই আলোচনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দেখায় ভারতের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাবিশ কুমার বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের জীবন রক্ষায়, সেখানকার শান্তি-সুরক্ষা বজায় রাখতে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের কয়েকজন সদস্য প্রশ্ন তুলেছেন। তবে এটি সত্যিই দুঃখজনক।
গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। বিশেষ এই মর্যাদা বাতিলের পর কার্যত পুরো বিশ্ব থেকে কাশ্মীরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। কাশ্মীরের মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন, রাজনৈতিক নেতাদের বন্দির পাশাপাশি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
- ৩৯তম বিসিএস : নিয়োগ পেলেন আরও ১৬৮ জন চিকিৎসক
- বিতর্কিত ও সুবিধাবাদীদের দলে না টানার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের
এ নিয়ে প্রতিবেশি পাকিস্তানের সঙ্গেও ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয় ভারতের। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশি দুই দেশের মাঝে যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলেও বিশ্ব নেতাদের হুঁশিয়ার করে দেন।
তিনি বলেন, এই যুদ্ধ শুরু হলে তা শুধু পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুটি দেশের মাঝে সীমিত থাকবে না। বরং এই যুদ্ধের প্রভাব এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সূত্র : দ্য ওয়ার