দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সান্ধ্য কোর্স বন্ধ ও আইন যথাযথভাবে মেনে চলাসহ ১৩ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপেক্স বডি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আজ বুধবার ওই নির্দেশনা পাঠায়।
এতে ভিসিদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন এবং নতুন বিভাগ ও পদ সৃষ্টিতে ইউজিসির পূর্বানুমোদন গ্রহণ, নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসরণের তাগিদও দেয়া হয়েছে। দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের পাঠানো ওই নির্দেশনা সংবলিত চিঠির বিষয় রাষ্ট্রপতি তথা চ্যান্সেলর এবং প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, সান্ধ্য কোর্স পরিচালনা করায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে বিধায় তা বন্ধ হওয়া দরকার।
উল্লেখ্য, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্স নিয়ে সংঘটিত নানাদিক নিয়ে গত ১৯ আগস্ট যুগান্তরে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রাষ্ট্রপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ নিয়ে বলে আসছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না।
এ পরিস্থিতিতে এবার খোদ ইউজিসি চিঠি দিল। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অন্যান্য ক্ষেত্রে সংঘটিত অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে ভিসিরা নিজেদের মেধা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দিয়ে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রতিপালন করে যাচ্ছেন। তবুও নানা কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি অনুসরণে শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। এ কারণে উচ্চশিক্ষা প্রশাসনে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা, যা কাম্য নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন অনুষদ, বিভাগ, প্রোগ্রাম ও ইন্সটিটিউট খোলা এবং নতুন পদ সৃষ্টি বা বিলুপ্তির ক্ষেত্রে কমিশনের পূর্বানুমোদন নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু ইউজিসি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, দেশের কোনো কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের অনুমোদন ছাড়াই নতুন বিভাগ, প্রোগ্রাম ও ইন্সটিটিউট খুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে, যা বাঞ্ছনীয় নয়।
শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ এবং পদোন্নতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের আইন মেনে চলতে চিঠিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিধি বহির্ভূতভাবে ‘সেশন বেনিফিট’ সুবিধা প্রদান এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে নিম্নতর গ্রেড থেকে উচ্চতর গ্রেডে উন্নীত করা বাঞ্ছনীয় নয়।
এতে আরও বলা হয়, নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হচ্ছে। এমনকি পদোন্নতি ও পদোন্নয়নের ক্ষেত্রেও নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানো হচ্ছে। সরকারের আর্থিক বিধি লঙ্ঘন করে দেয়া হচ্ছে ভূতাপেক্ষ জ্যেষ্ঠতা। এ সব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, বিধি-বিধান এবং সরকারের নিয়ম-নীতি প্রতিপালন করা অবশ্য কর্তব্য।
- সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে খালেদা জিয়ার মেডিকেল প্রতিবেদন
- বিভ্রান্তিকর চিত্র উপস্থাপন করেছে গাম্বিয়া : সু চি
সরকারি ‘আর্থিক বিধিমালা’ অনুযায়ী আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়ে চিঠিতে বলা হয় একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং এসব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রয়োজনে কমিশনের পরামর্শ নিতে পারে।
এ ছাড়া চিঠিতে দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে ইউজিসি।