প্রথম ম্যাচে রাজশাহী রয়্যালসের কাছে ৯ উইকেটের বড় হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচেই স্বরূপে ফিরলো ঢাকা প্লাটুন। মিরপুরে তামিম ইকবালের ব্যাটিং আর থিসারা পেরেরার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ভর করে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ২০ রানে হারিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।
১৮১ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ছিল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। ভয়ংকর চেহারায় হাজির হতে চেয়েছিলেন ওপেনার মাহিন্দা রাজাপাকসে। কিন্তু ১২ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় ২৯ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন মাশরাফি।
এরপর দ্রুতই ফিরেন ইয়াসির আলি (৩)। তৃতীয় উইকেটে দলকে অনেকটা এগিয়ে নেন সৌম্য সরকার আর ডেভিড মালান। সৌম্য ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৬ বলে ৩৫ রান (৫ চার আর ১ ছক্কায়) করেন। তবে মালান ঠিক টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা করতে পারেননি। বল খরচ করে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি।
মাঝে সাব্বির রহমান (৪) আর দাসুন শানাকাকে (০) তুলে নেন থিসারা পেরেরা। ১৮তম ওভারের শেষ বলে ওয়াহাব রিয়াজের শিকার হন ধীরগতিতে এগিয়ে যাওয়া মালানও। ৩৬ বল খেলে তিনি করেন ৪০ রান। রানের চাপ তখন মাথার ওপরে কুমিল্লার।
একটু আশা জাগিয়েছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। ২৭ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় ৩৭ রান করা উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যানকেও তুলে নেন থিসারা পেরেরা। ঢাকার জয় তখন বলতে গেলে নিশ্চিত হয়ে গেছে। লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা আর অসাধ্য সাধন করতে পারেননি।
থিসারা পেরেরা ৪ ওভারে ৩০ রান খরচ করে নেন ৫টি উইকেট। ওয়াহাব রিয়াজ ২টি, মাশরাফি আর মেহেদী হাসান নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে দেশসেরা এই ওপেনার তামিম ইকবালের ঝড়ো ৭৪ রানের সঙ্গে থিসারা পেরেরার বিধ্বংসী ৪২ রানের ইনিংসে ভর করে ৭ উইকেটে ১৮০ রান তুলে ঢাকা প্লাটুন।
অথচ ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল মাশরাফির দল। প্রথম বলেই মুজিব উর রহমানের এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফেরেন এনামুল হক বিজয়। চমক দেখিয়ে লোয়ার অর্ডারের মেহেদী হাসানকে তিন নম্বরে পাঠায় ঢাকা। মেহেদী অবশ্য ১৭ বলে ১২ রানের বেশি এগোতে পারেননি।
তবে এরপরই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তামিম। উইকেটের চারদিকে বাহারি সব শট খেলতে থাকেন। মাঝে ২৪ বলে ২৩ রানের ধীরগতির এক ইনিংস খেলে সাজঘরের পথ ধরেন লরি ইভান্স।
উইকেটে আসেন থিসারা পেরেরা। সেখান থেকে তামিম-থিসারার তাণ্ডব চলতে থাকে। ১৭তম ওভারে দাসুন শানাকার ওপর চড়াও হন তামিম। ওভারের প্রথম পাঁচ বলে ২টি আর ১টি ছক্কা হাঁকান। কিন্তু শেষ বলে তাকে তুলে মারতে গিয়ে সাব্বির রহমানের ক্যাচ হন বাঁহাতি এই ওপেনার। ৫৩ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় গড়া তামিমের ৭৪ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংসের সমাপ্তি তাতেই।
তামিম আউট হওয়ার পরই ৫ বলের ব্যবধানে ৩টি উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে ঢাকা প্লাটুন। এর মধ্যে সৌম্য সরকার এক ওভারেই ফেরান শহীদ আফ্রিদি (২ বলে ৪ রান) আর ওয়াহাব রিয়াজকে (১ বলে ০)।
- ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন মুসলিমদের প্রতি ‘বৈষম্যমূলক’ : জাতিসংঘ
- জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গৃহীত
তবে থিসারা পেরেরা একটা প্রান্ত ধরে ঠিকই এগিয়ে নিয়েছেন দলকে। ১৭ বলে ৭ চার আর ১ ছক্কায় লঙ্কান এই ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ৪২ রানে। ৫ বলে ১ ছক্কায় ৯ রান করে ইনিংসের শেষ ডেলিভারিতে রানআউট হন মাশরাফি।
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সৌম্য সরকার আর দাসুন শানাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা প্লাটুন: ২০ ওভারে ১৮০/৭ রান (তামিম ৭৪, পেরেরা ৪২*, ইভান্স ২৩)।
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৬০/৯ (মালান ৪০, অঙ্কন ৩৭, সৌম্য ৩৫; পেরেরা ৫/৩০)।
ফল: ঢাকা প্লাটুন ২০ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: থিসেরা পেরেরা (ঢাকা প্লাটুন)।