ঢাকা সিটি নির্বাচন : আ. লীগের ৫ ও বিএনপির ২ জন নির্বাচনী মাঠে

মত ও পথ প্রতিবেদক

ঢাকা সিটি নির্বাচন

ঢাকা জেলার বেরাইদ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৪২ নম্বর ওয়ার্ড। সিটি করপোরেশনের আওতায় এলেও বালু নদীর তীরের এ ওয়ার্ডটির জনজীবনে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত হওয়ার পর মাত্র দুই কোটি ২৬ লাখ টাকার মতো বরাদ্দ এসেছে। দুটি সড়কের কাজ করার কথা আছে ওই অর্থ দিয়ে। একটি রাস্তার টেন্ডারও হয়েছে।

এরই মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ডামাঢোল শুরু হয়ে গেছে। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা কাজও শুরু করেছেন। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে এরই মধ্যে তোড়জোড় শুরু করেছেন পাঁচ নেতা। অন্যদিকে বিএনপির দুজন আছেন মনোনয়ন দৌড়ে।

৪২ নম্বর ওয়ার্ডটির পূর্বদিকে রয়েছে বালু নদী। নদীর ওপারে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা। গত নির্বাচনে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ হাজারের কিছু বেশি ভোটার ছিল। সব মিলিয়ে ৪০ হাজারের মতো মানুষের বাস ওয়ার্ডটিতে। পূর্বপাড়া, ভূঁইয়াপাড়া, জেলেপাড়া, ঋষিপাড়া, মোড়লপাড়া, আশকার টেক, হারালদিয়া, চান্দারটেক ও ডুবুরদিয়া মহল্লা নিয়ে গঠিত হয়েছে ওয়ার্ডটি।

ঢাকার অদূরে অবস্থিত এই ওয়ার্ডটির বেশির ভাগ বাসিন্দা ব্যবসায়ী। পুরো ওয়ার্ডে একটি খেলার মাঠ রয়েছে। এ ছাড়া পুরো ওয়ার্ডটিতে কোনো কমিউনিটি সেন্টার বা পার্কের মতো অবকাঠামো নেই।

স্থানীয়রা জানায়, আসন্ন নির্বাচনে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে কাজ শুরু করেছেন। বর্তমান কাউন্সিলর ফারুক আহম্মেদ স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর ভাগ্নে। বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এবারও দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন তিনি।

এ ছাড়া ওয়ার্ডজুড়ে আলোচনায় রয়েছেন বেরাইদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বেরাইদ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও মহানগর উত্তর যুবলীগের সদস্যও ছিলেন।

বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন তিনি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। গত নির্বাচনের আগে তাঁর ভাই যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান দুখু খুন হন। সে কারণে পরিবারের অসম্মতি থাকায় কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত থাকেন তিনি। তবে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে চান।

বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আমজাদ হোসেন রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে। আমজাদ হোসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহসম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগ ও বৃহত্তর গুলশান থানা ছাত্রলীগের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

৪২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আনসার মিন্টু। এর আগে বেরাইদ ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি বাড্ডা থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তবে দলের টিকিট যিনি পাবেন তাঁকে সমর্থন দেবেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন মিন্টু।

৪২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মশিউর রহমান কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুমতি মিললে তিনি প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে বিএনপির দুই প্রার্থী রয়েছেন ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায়। বেরাইদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রয়েছেন আলোচনায়।

এ ছাড়া তুহিনুর ইসলাম তুহিন বিএনপি থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে ওয়ার্ডে।

কাউন্সিলর ফারুক আহম্মেদ বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই কোটি টাকার মতো বাজেট পেয়েছি সিটি করপোরেশন থেকে। সে টাকা দিয়ে দুটি কাজ করা হবে। দল চাইলে এবারও আমি প্রার্থী হব।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বেরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থাকাকালীন বেশির ভাগ রাস্তাঘাট আমি করেছি। এই এলাকার মানুষ আমাকে চায়। গত বছর মা বারণ করায় প্রার্থী হইনি। তবে এবার আওয়ামী লীগের ব্যানারে প্রার্থী হব।

আমজাদ হোসেন বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রজীবন থেকে আমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত। দলের সম্মতি পেলে নির্বাচনে অংশ নেব।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে