সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল ভারত। এই আইনের প্রতিবাদে সরব বিভিন্ন মহল। এবার মোদী সরকারের এই আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল জাতিসংঘ। এই আইন মুসলিমদের প্রতি ‘বৈষম্যমূলক’ বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
আজ শুক্রবার জেনেভায় এক সাংবাদিক বৈঠকে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত দপ্তরের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স বলেন, ‘ভারতের নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চরিত্রগতভাবে বৈষম্যমূলক। এই আইন নিয়ে আমরা চিন্তিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই আইন খতিয়ে দেখতে চলেছে। এই আইন পর্যালোচনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষায় ভারতের দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গটিও আদালত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে সারা ভারত উত্তাল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে আসাম এবং ত্রিপুরায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। উত্তরপূর্বের আর এক রাজ্য মেঘালয়ের পরিস্থিতিও ক্রমশ ঘোরাল হচ্ছে। গোটা পরিস্থিতিতে এমনিতেই অস্বস্তিতে মোদী সরকার। এর মধ্যে কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়াল জাতিসংঘ।
ভারতের নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ভারতের বাইরে এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাইল যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন।
সম্প্রতি ইউএস কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (USCIRF) এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘যদি বিলটি সংসদের উভয় কক্ষে পাশ হয়ে যায়, তাহলে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কেন্দ্রের প্রধান নেতৃ্ত্বের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আনা উচিত আমেরিকার।’
মোদী সরকারের বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে আসামে প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে তা ছড়িয়ে পড়ে ত্রিপুরায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এই দুই রাজ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিচ্ছে প্রশাসন। এ দিকে, সময় যত বাড়ছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যেও দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভের আগুন।
- নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল: এবার উত্তাল মেঘালয়ে কারফিউ জারি
- মুসলিমবিরোধী বিল রাজ্যসভায়ও পাস, উত্তাল আসাম-ত্রিপুরায় সেনা মোতায়েন
শুক্রবার মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে বিশাল বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে। ক্ষিপ্ত জনতাকে পুলিশ লাঠিচার্জও করে। শিলং থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে বিক্ষোভের মুখে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা। পাশাপাশি রাজধানী দিল্লিতেও এই বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সংঘটিত হয়েছে। জামিয়া মিল্লিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন।
পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকেও এদিন সকাল থেকে রেল অবরোধ-বিক্ষোভের খবর পাওয়া গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গাতেও আরপিএফ কর্মীদের মারধর করা, কেবিনম্যানকে পেটানো থেকে আগুনও লাগানো হয় স্টেশনে। ডায়মন্ড হারবার শাখার বাসুলডাঙাতেও এবং বারুইপুর-ডায়মন্ড হারবার শাখায় রেল অবরোধ করেন এই আইনের বিরোধীরা।
সূত্র : এই সময়