পোশাক খাতে বিদেশিদের পরামর্শ আর নয় : বিজিএমইএ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

বিজিএমইএ

পোশাক খাতের সংস্কারে বিদেশিদের পরামর্শ আর নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক। তিনি বলেন, বিদেশিদের পরামর্শে আমরা কতভাবে পোশাক খাতে টাকা খরচ করেছি, সেটা বলে শেষ করতে পারব না। আমরা বলতে চাই, বিদেশিদের পরামর্শে পোশাক খাতে আর সংস্কার করব না।

আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ‘স্টাডি অন সাপ্লাই চেন রেজিলেন্স অব আরএমজি সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি রুবানা হক বলেন, উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের সংগঠন (অ্যালায়েন্স) ও ইউরোপিয়ান ক্রেতাদের সংগঠন (অ্যাকোর্ড) বাংলাদেশের পোশাক কারখানা পরিদর্শন করে। তাদের সঙ্গে আটটি পয়েন্ট নিয়ে আমাদের বিবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি বিষয়ে তাদের রাজি করানো গেছে। আরও কিছু বিষয় আছে, সেগুলোর বিষয়ে রাজি করাতে হলে আবার বিদেশিদের হায়ার করতে হবে। এভাবে পোশাক খাত চলতে পারে না।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ সময়েও আমরা বিল্ডিং কোড নীতিমালা ২০১৯ অনুমোদন করাতে পারিনি। এই সুযোগে বিদেশিরা এসে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে। যেটা বাধ্য হয়েই মেনে নিতে হচ্ছে। রানা প্লাজা ধসের পর দেড় বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছি, শুধু অগ্নিনির্বাপণের সরঞ্জাম কেনার কাজে। কিন্তু এটা আমাদের পরিবেশের সঙ্গে যাচ্ছে কি-না কেউ কথা বলল না।

রুবানা হক বলেন, পোশাক খাতে গত পাঁচ মাসে ছয় ভাগের বেশি নেগেটিভ গ্রোথ হয়েছে। স্পষ্টভাবে বলা যায়, পোশাক খাত ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এসব কাজে সরকারকে দোষ দেওয়া সহজ। কিন্তু আমরা নিজেরা কতটুকু প্রস্তুতি নিয়েছি, এটাও দেখতে হবে। প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে।

শিগগিরই ঢাকা-চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করার চিন্তা অনেক আগের। এটা বাস্তবায়ন করলে সাপ্লাই চেইনে কোনো সমস্যা হবে না। ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা একটাই। তাই শিগগিরই আমাদের ঢাকা-চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু করতে হবে।

দেশের শ্রমশক্তি প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, ১০ বছর পর দেশে স্বস্তায় শ্রম পাওয়া যাবে না। এসময় শ্রমিক ঘাটতি পড়বে এটা আমাদের জন্য আনন্দের খবর। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সব থেকে বড় সম্পদ মানুষ। জনসংখ্যাকে প্রশিক্ষিত করে দক্ষতা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা দক্ষ জনশক্তি গড়তে কাজ করে যাচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের সবক্ষেত্রে সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে, এটা দূর করতে কাজ চলছে। অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ চলছে যেন কোনোভাবেই সাপ্লাই চেইনের ঘাটতি না হয়। কৃষকেরও সাপ্লাই চেইন দরকার আছে। তিনি যেন তার উৎপাদিত পণ্য সরাসরি বাজারে এনে বিক্রি করতে পারেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব নূরুল আমিন, পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের প্রধান খলিলুর রহমান খান প্রমুখ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে