মুসলিম নন বলে নিশ্চিন্ত, তাহলে মূর্খের স্বর্গে আছেন : সানা গাঙ্গুলি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সানা গাঙ্গুলি
ছবি : ইন্টারনেট

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কড়া সমালোচনা করে সাড়া জাগানো বার্তা দিয়ে দেশটিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির মেয়ে সানা গাঙ্গুলি।

আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে খুশবন্ত সিংহের লেখা ‘দ্য এন্ড অব ইন্ডিয়া’ বইয়ের কিছু উদ্বৃতি পোস্ট করার পর এ আলোচনা শুরু হয়।

universel cardiac hospital

উদ্ধৃতির পুরোটাই দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার, বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারকে কটাক্ষে ঠাসা বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। পশ্চিমবঙ্গেও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

আনন্দবাজার বলছে, সেই আবহে সৌরভ-কন্যার এমন ‘পোস্ট’ রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। ইনস্টাগ্রাম স্টোরি হিসেবে পোস্ট করতে গিয়ে তিনি ২০০৩ সালে প্রকাশিত খুশবন্ত সিংহের ‘দ্য এন্ড অব ইন্ডিয়া’ বইয়ের কিছু উদ্ধৃতি বেছে নিয়েছেন।

ছবি : ইন্টারনেট

সানা সেই বই থেকে তুলে ধরেছেন যে অংশ, সেখানে লেখা হয়েছে, ‘প্রতিটা ফ্যাসিস্ট সরকারের একটা দল বা গোষ্ঠীর প্রয়োজন হয়। নিজেদের বেড়ে ওঠার জন্য তারা ওই দল বা গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে তাদের শয়তানেও পরিণত করে। দু-একটা দল দিয়ে এটা শুরু হয়। কিন্তু সেটা কখনও সেখানে শেষ হয় না। ঘৃণার ওপর নির্ভর করে যে আন্দোলন, সেই আন্দোলন নিজেকে ধরে রাখতে পারে অবিরাম একটা ভয় বা দ্বন্দ্বের বাতাবরণ তৈরি করে।’

এখানেই থেমে থাকেননি সানা। খুশবন্তের লেখার আরও কিছু অংশ তিনি পোস্ট করেছেন। সেই অংশে লেখা হয়েছে, ‘আজ যারা আমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছি, ভাবছি আমরা তো মুসলমান বা খ্রিষ্টান নই, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছি। সঙ্ঘ ইতিমধ্যে বামপন্থী ইতিহাসবিদ এবং পশ্চিমি সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী যুবসমাজকে টার্গেট করেছে। কাল তাদের ঘৃণা গিয়ে পড়বে স্কার্ট পরিহিত নারী, যারা মাংস খান, মদ্যপান করেন, বিদেশি সিনেমা দেখেন, বছর বছর তীর্থে যান না, দাঁতনের পরিবর্তে টুথপেস্ট ব্যবহার করেন, আয়ুর্বেদিকের বদলে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ পছন্দ করেন, দেখা হলে ‘জয় শ্রী রাম’ বলার বদলে হাত মেলান বা চুম্বন করেন, তাদের ওপর। কেউ নিরাপদ নয়। ভারতকে বাঁচাতে হলে এগুলো আমাদের ভীষণভাবে অনুধাবন করতে হবে।’

নেট দুনিয়ায় ইতিমধ্যে সানার এই পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই বলছেন, ইনস্টাগ্রাম পোস্টে যেভাবে খুশবন্তের লেখার মাধ্যমে সানা ভারতের বর্তমান পরিস্থিতিকে তুলে ধরেছেন, তা প্রশংসনীয়। কেউ কেউ আবার সানার বয়সকে উল্লেখ করে লিখেছেন, রাজনীতি বোঝার জন্য বড়ই অল্প বয়স। সেখানেই অপর পক্ষ মনে করিয়ে দিয়েছে, ভারতে ভোট দেয়ার বয়স কিন্তু ১৮।

সানার বাবা সৌরভ গাঙ্গুলি সব সময়ই রাজনৈতিক মন্তব্য থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন। তার মুখে রাজনৈতিক বিতর্কিত কোনো মন্তব্য কখনও শোনা যায়নি। কিন্তু সানার পোস্টে  রাজনৈতিক বার্তা খুঁজছেন অনেকে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে