লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাহাড় সমান। যা টপকে জয় পাওয়াটা যেকোনো দলের জন্যই কঠিন। কিন্তু ঢাকা যেভাবে লড়াই করল তা প্রশংসাযোগ্য। সেই সাথে দারুণ একটি ম্যাচ উপভোগ করল ক্রিকেটপ্রেমীরা। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে বুধবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দেয়া ২২২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২০৫ রান করে অলআউট হয় ঢাকা প্লাটুন। যার ফলে ১৬ রানে ম্যাচটি জিতে নেয় চট্টগ্রাম।
ঢাকার পক্ষে ৩৫ বলে ৫২ রান করেন ওপেনার মুমিনুল হক। ১৯ বলে ২৭ করেন জাকের আলী। ২৭ বলে ৪৭ করেন থিসারা পেরেরা। ৬ বলে ২৩ করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। চট্টগ্রামের বোলারদের মধ্যে মেহেদী হাসান রানা ৩টি, নাসির হোসেন ২টি, মুক্তার আলী ৩টি ও কেজরিক উইলিয়ামস ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
ঢাকা ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার বিজয়কে হারায়। এরপর ৫২ রানের জুটি গড়েন মুমিনুল ও জাকের। দলীয় ৬০ রানে জাকের বিদায় নেন। এরপর লরি ইভান্স নেমে ১১ বলে ১৭ করে বিদায় নেন। তারপর আসিফ আলী নেমে ৬ বলে ১৫ করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
১৩তম ওভারে নাসিরের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বিদায় নেন মুমিনুল। ভরসা ছিল শহীদ আফ্রিদিকে নিয়ে। কিন্তু তিনি আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। ৬ বলে ৯ রান করে কেজরিকের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি আফ্রিদি।
তারপর অধিনায়ক মাশরাফি নেমে ৬ বলে ৩টি ছক্কা ও ১টি চারের সাহায্যে ২৩ রান করে বিদায় নেন। নাসিরের করা ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম তিন বলে ছক্কা ও চতুর্থ বলে চার মারার পর পঞ্চম বলে ইমরুলের হাতে ক্যাচ হন ঢাকার অধিনায়ক। শেষদিকে থিসারা পেরেরা লড়াই করলেও দলকে জেতাতে পারেননি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২২১ রান সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম। এবারের বিপিএলে চট্টগ্রাম প্রথম দল হিসেবে ২০০ রানের গণ্ডি পার করল। আর বিপিএলের ইতিহাসে এটি তৃতীয় সেরা স্কোর।
চট্টগ্রামের ওপেনার লেন্ডল সিমন্স ৩৬ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৫৭ রান করেন। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২৮ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৫৯ রান করেন। ২৪ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কার মাধ্যমে ৪০ রান করেন। ১৩ বলে ২৬ করেন অভিশকা ফার্নান্দো। ১৮ বলে ২৭ করে অপরাজিত থাকেন চাঁদইউক ওয়ালটন। ঢাকা প্লাটুনের বোলারদের মধ্যে হাসান মাহমুদ ২টি ও সালাউদ্দিন শাকিল ১টি করে উইকেট নেন।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট যে ব্যাটিং স্বর্গ তা আগে থেকেই জানা ছিল চট্টগ্রামের। তাই ব্যাটিংয়ে নেমে তারা থিতু হতে সময় নেয়নি। শুরু থেকেই ঢাকার বোলারদের উপর তাণ্ডব চালাতে থাকেন। দলীয় অর্ধশত পূরণ হয় পঞ্চম ওভারে।
দলীয় ৫১ রানে ফিরে যান অভিশকা। এরপর সিমন্সের সাথে জুটি বেঁধে ইমরুলও বিস্ফোরক ব্যাটিং করতে থাকেন। দলীয় ১০১ রানে রান আউট হন সিমন্স। তারপর রিয়াদ ও ইমরুল ৬২ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১৬৩ রানে বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইমরুল।
- বেতনভুক্ত ৩০ হাজার রাজাকারের তালিকা উপস্থাপন করবে ঘাদানিক
- সরকারবিরোধী আন্দোলনে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান বিএনপির
ইমরুল ফিরলেও রিয়াদের ব্যাটিং তাণ্ডব থেমে ছিল না। ২৪ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশত পূরণ করেন রিয়াদ। ১৮তম ওভারে হাসান মাহমুদের ফুল টস ডেলিভারিতে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মুমিনুলের হাতে ক্যাচ হন রিয়াদ। পরে ওয়ালটন ঝড় তুলে দলের রান আরো বাড়িয়ে দেন।
পাঁচ ম্যাচ খেলে চট্টগ্রামের এটি চতুর্থ জয়। ৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে রয়েছে। অন্যদিকে, চার ম্যাচ খেলে ঢাকার এটি দ্বিতীয় হার। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পঞ্চম অবস্থানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ১৬ রানে জয়ী চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ইনিংস: ২২১/৪ (২০ ওভার)
(সিমন্স ৫৭, অভিশকা ২৬, ইমরুল ৪০, রিয়াদ ৫৯, ওয়ালটন ২৭*, নুরুল ৭*; মাশরাফি ০/৪২, সালাউদ্দিন ১/২৭, হাসান মাহমুদ ২/৫৫, মেহেদী হাসান ০/৩৩, থিসারা ০/৩৩, শহীদ আফ্রিদি ০/৩০)।
ঢাকা প্লাটুন ইনিংস: ২০৫ (২০ ওভার)
(মুমিনুল ৫২, এনামুল ১, জাকের ২৭, ইভান্স ১৭, আসিফ ১৫, থিসারা ৪৭, শহীদ আফ্রিদি ৯, মাশরাফি ২৩, মেহেদী হাসান ২, হাসান মাহমুদ ০, সালাউদ্দিন ০*; নাসুম ০/২৮, রানা ৩/২৩, নাসির ২/৬০, মুক্তার ৩/৪২, কেজরিক ২/৪৮)।
ম্যাচ সেরা: মেহেদী হাসান রানা (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)