ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী রোববার (২২ ডিসেম্বর) থেকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বায়ু দূষণকারী ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ধুলাবালিমুক্ত পরিচ্ছন্ন ঢাকা মহানগরী গড়া-সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় মেয়র এ কথা জানান। এসময় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র বলেন, বায়ুদূষণ রোধে কী কী করতে পারি, এটা একটা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। কিছু আছে দীর্ঘমেয়াদি, কিছু আছে স্বল্পমেয়াদি। এই মুহূর্তে আমরা দেখছি আমাদের রোগী মরে যাচ্ছে, কোরামিন ইনজেকশন দিতে হবে। আমি মনে করি, এটাকে শর্ট টার্ম হিসেবে চিন্তা করতে পারি। এই শর্ট টার্মের জন্য আমরা কী করতে পারি।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বলেছি ভালোবাসার দিন শেষ, এখন হচ্ছে জরিমানা। সিটি কর্পোরেশনের যে ঠিকাদাররা কাজ করছে তাদের আমি প্রথমে জরিমানা করব। কারণ, নিজের ঘরে থেকে যদি জরিমানা শুরু না করি মানুষ কিন্তু উল্টো বদনাম করবে। সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদারদের বলেছি, আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে আমি ঘোষণা ছাড়াই বিভিন্ন জায়গায় যাব।’
‘যে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি কমপ্লায়েন্স মেইনটেইন না করে সিটি কর্পোরেশনে কাজ করবে, হয় তার ব্যবসা বন্ধ করতে হবে, না হয় জরিমানা দিতে হবে। যেকোনো একটিতে আসতে হবে। ফাইনের মাধ্যমে আমরা নোটিশ দেব। তারপরও যদি কাজ না করে অবশ্যই সিটি কর্পোরেশনের কন্ট্রাক্টর যারা আছেন তাদের ব্ল্যাকলিস্ট করা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পন্থা থাকবে না আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘ব্যবসা করব আমরা, পয়সা কামাই করব নিজেরা। কিন্তু আমরা কমপ্লায়েন্স মেইনটেইন করব না- এটা হতে পারে না। এটা নাম্বার ওয়ান মেসেজ।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মেট্রোরেলের যে কন্ট্রাক্টর ব্যবসা করছে পয়সা বানানোর জন্য, কিন্তু সে জনগণকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। তাদের জরিমানা করার জন্য আমরা কাজ করছি। মন্ত্রী ও সচিবকে বলেছি, আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট দিন। আমার যে কয়জন ম্যাজিস্ট্রেট আছে, আমি প্রত্যেককে বলেছি, ২২ ডিসেম্বর থেকে তোমরা আমার সঙ্গে থাকবেন। বিভিন্ন এলাকায় আমাদের সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদারদের আগে ফাইন করবেন। তারপর আপনি ফাইন করবেন অন্য কন্ট্রাক্টরদের।’
তিনি বলেন, ‘২২ ডিসেম্বর থেকে আমার অফিস হবে গাড়িতে ও মোবাইলে। আমি সিটি কর্পোরেশনে অফিস করব না।’
রাস্তার ধুলা দূর করার জন্য একটি সুইপিং মেশিন কেনা হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আগামী জুন মাসের মধ্যে ইনশাআল্লাহ আরও ছয়টি সুইপিং মেশিন আসবে। তিন ধরনের সড়কের জন্য আমরা ইতোমধ্যে ডিজাইন করেছি, আমরা পর্যায়ক্রমে চলে যাব।’
ওপরের দিকে উড়তে থাকা ধুলা দূর করার মিস্ট সুইপিং মেশিন কেনার জন্য আজকে দরপত্র খোলা হচ্ছে বলেও জানান মেয়র।
আগামী তিন বছরের মধ্যে ঢাকার প্রত্যেকটি অলিগলিতে মেকানিক্যাল সুইপিং মেশিন দেখা যাবে বলে আশাবাদ জানিয়ে আতিকুল বলেন, ‘তবে ঝাড়ুও থাকবে।’
‘আব্দুল্লাহপুর থেকে আমরা যদি ঢাকার দিকে আসি, কোনো মানুষ কিন্তু ওই সড়কে চলতে পারে না। মনে হয় এটি একটি আজবখানা করে রেখেছে। ধুলা উড়ছে, অত্যন্ত খারাপ অবস্থা।’
তিনি বলেন, ‘আমি বিআরটির যারা আছেন তাদের অনুরোধ করব, কন্ট্রাক্টরদের আপনারা ধরুন। তা নাহলে আমরা সিটি কর্পোরেশন তাদের ধরব। সেখানে আমরা তাদের শাস্তি দেব। তারা তো কমপ্লায়েন্সের জন্য টাকা নিয়েছে। ফুটপাত ক্লিন রাখার জন্য টাকা নিয়েছে। টাকা নিচ্ছে কিন্তু জবাবদিহিতা নেই, তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে।’
মেয়র আতিকুল বলেন, ‘জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে সমস্যা সমাধানের জন্য। আজকে জনগণ যখন আমাদের ফোন করে বলেন, এই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, ওই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি কেন? সুতরাং আমাদের সেন্ট্রাল ডাকটিংয়ের (সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা) একটি উপায় বের করতেই হবে। এই শহরকে যদি একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হয়, সেন্ট্রাল ডাকটিংয়ের কোনো বিকল্প নেই।’
- আগামীকাল আ’লীগের সম্মেলন : নেতৃত্বে ব্যাপক রদবদলের আভাস
- রাজাকারের তালিকা : মন্ত্রীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে নোটিশ
‘আজকে আমি খুড়ব। ওয়াসা এমডি এসেছিলেন, উনি যে তথ্য দিলেন, ঢাকা শহরের ৮০০ কিলোমিটার সড়ক কমপ্লিট, কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে কীভাবে পানি আরও সেভ হবে এবং কীভাবে বিশুদ্ধ পানি দিতে পারি সেজন্য একটা প্রকল্প আসছে। সেই প্রকল্পের জন্য আমাদের ৮০০ কিলোমিটার রাস্তা খুঁড়তে হবে। আমরা এ বাস্তবতার মধ্যে আছি। সুতরাং সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই। এই বাস্তবতার মধ্যে আছি আমরা। ডিপিডিসিও এসেছে তারা রাস্তা কাটবে, তাদেরও লাইন নিতে হবে। ডিপিডিসিও নেবে, ওয়াসাও নেবে, আবার ধুলাও উড়বে না, এটি একটি কঠিন বাস্তবতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। পূর্ব দিকে যে ১৮টি ওয়ার্ড আছে সেগুলোর ডিজাইনের মধ্যে সেন্ট্রাল ডাকটিং সিস্টেম করে আমাদের আগাতে হবে।’