মোশাররফের মরদেহ পার্লামেন্টের সামনে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পারভেজ মোশাররফ
পারভেজ মোশাররফ। ফাইল ছবি

গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। দেশটির একটি বিশেষ আদালত নজিরবিহীন এই রায়ের সঙ্গে এক আদেশে বলেছেন, মৃত্যুদণ্ডের আগে মারা গেলে পারভেজ মোশাররফের মরদেহ পার্লামেন্ট ভবনের সামনে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখতে হবে।

এখন দেশটির ওই বিশেষ আদালতের বিচারক প্যানেলের প্রধানকে অপসারণ করতে চাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাক সরকার।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালে সংবিধান লঙ্ঘন করায় উচ্চতর রাষ্ট্রদ্রোহের প্রমাণ পাওয়ার পর গত মঙ্গলবার ৭৬ বছর বয়সী সাবেক এই একনায়ককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে তিনি ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তার মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে বর্তমানে দুবাইয়ে চিকিৎসাধীন জেনারেলকে গ্রেফতার করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

‘কিন্তু তার আগেই তিনি মারা গেলে ইসলামাবাদের ডি-চত্বরে নিয়ে এসে তার মরদেহ তিনদিন ঝুলিয়ে রাখতে হবে,’ বললেন আদালত। দেশটির পার্লামেন্টের বাইরেই এই চত্বর অবস্থিত।

মূল দণ্ডে দুর্বলতা ও ফাঁক রয়েছে বলে সরকার ঘোষণা দেয়ার পর বৃহস্পতিবার এই অদ্ভুত রায় এসেছে। এতে বিচারবিভাগ ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিভাজনের আভাসই দিচ্ছে।

মোশাররফের আইনজীবী এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন। পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী ফারোগ নাসিম বলেন, ওই তিন সদস্যের বিচারক প্যানেলের প্রধানকে অপসারণ করতে চাচ্ছে সরকার। বিচারক ওয়াকার আহমেদ শেঠ বিচারিক বিধিমালার লঙ্ঘন করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের জবাব হচ্ছে, এ ধরনের বিচারক হাইকোর্ট কিংবা সুপ্রিমকোর্টে বিচার পরিচালনার কর্তৃত্ব রাখেন না। তিনি অযোগ্য।

বিচার বিভাগের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার মধ্যেই সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, আদালতের ঘোষণা প্রমাণ করছে, বিচারের মূল রায়ে ত্রুটি রয়েছে। আজকের রায়ে বিশেষভাবে যে সব ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা মানবতা, ধর্ম, সভ্যতা ও আমাদের মূল্যবোধের বাইরে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া।

মূল রায় ইতিমধ্যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে ব্যথিত করেছে। দেশটির ইতিহাসের অর্ধেকটাই শাসন করেছে এই সামরিক বাহিনী।

মোশাররফের দেশপ্রেমের সাফাই গাইতে গিয়ে রায়ে আইনি প্রক্রিয়া অবহেলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে