আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন : রাজনীতিতে প্রাণপ্রবাহ সৃষ্টি হোক

সম্পাদকীয়

আ’লীগের কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে নেতাকর্মীদের ঢল।
আ’লীগের কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে নেতাকর্মীদের ঢল।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতি ও আর্দশগত চেতনার নাম। এ দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে প্রায় সমস্ত অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই দেশের রাজনীতির যে কোন ঘটনাপ্রবাহে সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগকে অনুসরণ করে। এবার দলটির ২১তম জাতীয় সম্মেলন চলছে। এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। গত দু’মাস ধরে দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে, কমিটি হয়েছে। সে সব কমিটিতে ঠাঁই হয়েছে অপেক্ষাকৃত নতুন মুখের। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, কমিটি ঘোষণার পর ওই সব সংগঠনে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় বিপর্যয়’-এর মধ্যে পড়ে। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দলটি কার্যত নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে। ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে দলের হাল ধরেন, বলা যায় এরপরই আওয়ামী লীগের নতুন অভিযাত্রা শুরু।

দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার সময় দলের নেতারা অবিশ্বাস্যভাবে বাঁচাতে পেরেছিলেন শেখ হাসিনাকে। ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সবদিক থেকেই এগিয়ে গেছে অবিশ্বাস্যগতিতে। বলা যায়- সারা পৃথিবীতে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে তিনি পরিচিত করেছেন।

আমরা আশা করব- এবারের কাউন্সিলে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি আগামীদিনে আওয়ামী লীগেও নতুন প্রাণপ্রবাহ সৃষ্টি হবে। কেননা, একটা কথা বেশ জোরেসোরে উচ্চারিত হচ্ছে, আর তা হলো দীর্ঘদিন টানা ক্ষমতায় থাকায় দলটির একশ্রেণির নেতাকর্মীর মধ্যে নির্লিপ্তভাব চলে এসেছে। এই সম্মেলন দলটির সর্বস্তরের কর্মীদের জাগিয়ে তুলবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এবং একই সঙ্গে প্রত্যাশা করিÑ আওয়ামী লীগ সরকার দেশে উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে প্রাণপ্রবাহ সৃষ্টি করেছে রাজনীতিতেও সেই প্রাণ ছড়িয়ে দিতে পারবে।

০২. স্যার ফজলে হাসান আবেদ আর নেই। ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন। স্বাধীনতা লাভের পর পরই তিনি সিলেটে যে ছোট্র একটি প্রদীপ জ্বেলেছিলেন তা বিগত পাঁচ দশকে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের ১১টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য ,শিক্ষা, ও স্বাবলম্বী করনের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে। শেষ দিকে দেশের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি যে অবদান রেখে গেছেন তাও অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি দেশে ও বিদেশে প্রভূত সম্মান লাভ করেছেন। তিনি বিট্রিশ সরকারের কাছ থেকে নাইটহুড পেয়েছেন, দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পদক লাভ। তাঁর মৃত্যুতে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হল।তবে জাতি তাকে চিরদিন মনে রাখবে। আমরা আশা করি- বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তিনি যে ভূমিকা রেখে গেছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক একই ধারায় অবদান রাখবে। আমরা তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে