পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সৌদি আরবের চাপে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠেয় ‘কুয়ালালামপুর সামিটে’ অংশ নেননি। তুর্কি মিডিয়া ‘ডেইলি সাবাহ’ এর বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘দ্য ডন’।
মালয়েশিয়া সামিটে অংশ নিলে পাকিস্তানকে দেয়া অর্থনৈতিক সমর্থন তুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছে সৌদি আরব। সেই হুমকির কারণেই কুয়ালালামপুর সম্মেলন অংশ নেননি ইমরান খান।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ এর বরাত দিয়ে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ডন।
ডেইলি সাবাহকে এরদোগান বলেছেন, ‘বর্তমানে ৪০ লাখ পাক নাগরিক সৌদিতে কাজ করছেন। রিয়াদ এরইমধ্যে ইসলামাবাদকে হুমকি দিয়ে বলেছে যে, পাকিস্তানিদের ফেরত পাঠানোর পরিবর্তে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়া হবে।’
এছাড়াও পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গচ্ছিত সৌদি আরবের অর্থও ফিরিয়ে নেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়েছে বলে সাবাহকে জানিয়েছেন এরদোগান।
এদিকে ‘দ্য ডন’ জানায়, সম্মেলনে অংশ না নিতে পারায় এরই মধ্যে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মাহাথিরের দফতরে দুঃখ প্রকাশ করে বার্তা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বলেছেন, ‘এটা ইমরান খানের ইচ্ছাধীন বিষয়। আমরা কখনোই তাকে জোর করতে পারি না। ব্যক্তিগত কোনো কারণে তিনি হয়তো আসতে পারছেন না। এখানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।’
প্রসঙ্গত, গত মাসে ‘কুয়ালালামপুর সামিট-২০১৯’ নামে তুরস্ক, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং কাতারকে সঙ্গে নিয়ে নতুন এক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ।
১৮ থেকে ২১ ডিসেম্বর ‘কুয়ালালামপুর সামিট-২০১৯’ নামে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনের এজেন্ডা হিসেবে গুরুত্বসহকারে থাকছে উন্নয়ন ও সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও সুশাসন, সংস্কৃতি ও পরিচয়, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতা, শান্তি-সুরক্ষা ও প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা এ সাতটি বিষয়।
এতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান ও কাতারের আমির শেথ তামিম বিন হামাদ আলে সানি ও ইন্দোনেশিয়ার জুকো উইদোদো অংশ নিয়েছেন। এছাড়া ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি অংশ নিতে পারেন বলেও বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
বৈঠকে বিশ্বের মোট ৫২টি রাষ্ট্রের প্রায় চার শতাধিক মুসলিম নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত থাকবেন। এই সম্মেলনে সৌদি আরবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা ছিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানেরও। তবে গত ১৭ ডিসেম্বর সম্মেলনে অংশ নিতে পারছেন না বলে জানান তিনি।