তামিম-মেহেদীর ফিফটিতে ঢাকার দাপুটে জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মেহেদী হাসান

তামিম ইকবাল সুস্থ হয়ে দলে ফিরতেই চেহারা পাল্টে গেছে ঢাকা প্লাটুনের। তিনি যেমন দুর্দান্ত খেলছেন, তেমন দাপুটে জয় তুলে নিচ্ছে দল। তামিম ও মেহেদী হাসানের ফিফটিতে এবার সিলেট থান্ডারকে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারালেন মাশরাফি ব্রিগেড।

এ নিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের বিশেষ আসরে ৬ ম্যাচে ৪ জয় পেলেন তারা।

universel cardiac hospital

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ঢাকাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তামিম ও এনামুল হক। উদ্বোধনী জুটিতে ৪৮ রান তোলেন তারা। দারুণ খেলতে খেলতে আচমকা কক্ষচ্যুত হন এনামুল। ২৩ বলে ৫ চারে ৩২ রান করে মোসাদ্দেক হোসেনের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি।

ওয়ানডাউনে নেমে তামিমকে যথার্থ সঙ্গ দেন আগের ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান মেহেদী হাসান। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে দারুণ মেলবন্ধন গড়ে ওঠে। স্বভাবতই সিলেট বোলারদের তুলোধুনো করতে থাকেন তারা। তাতে দ্রুত ঘুরে ঢাকার রানের চাকা। ধীরে ধীরে জয়ের পথে এগোতে থাকে দলটি। সেই পথে ফিফটি তুলে নেন তামিম-মেহেদী।

তবে এরপর বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি মেহেদী। ২৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ফেরেন তিনি। তবে জয় তখন হাতছোঁয়া দূরত্বে। পরে জাকির আলিকে নিয়ে বাকি কাজটুকু সারেন তামিম। শেষ পর্যন্ত ৯ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর করেন তারা।

তামিম ৪৯ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৬০ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। অপর প্রান্তে ১১ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২২ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত থাকেন জাকির।

বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ১৯তম ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সিলেট অধিনায়ক মোসাদ্দেক। ফলে আগে বোলিং শুরু করে মাশরাফি বিন মুর্তজার ঢাকা। শুরুতেই গেল ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আন্দ্রে ফ্লেচারকে তুলে নিয়ে দলকে সাফল্য এনে দেন মেহেদী হাসান।

পরে জনসন চার্লসকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠেন আবদুল মজিদ। ক্রিজে সেট হয়ে যান তারা। এসময়ে রক্ষণাত্মক ছিলেন মজিদ। তবে খোলস ছেড়ে বের হতে গিয়ে ধরা খান তিনি। শহীদ আফ্রিদির বলে বিদান নেন এ ওপেনার।

খানিক বিরতি দিয়ে ফিরে যান টপঅর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান। তবে থেকে যান চার্লস। ঢাকা বোলারদের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালান তিনি। পথিমধ্যে আসরে দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন এ ক্যারিবিয়ান। এরপরও তার ঝড় চলে। তাতে দ্রুতগতিতে ছোটে সিলেট।

তবে হঠাৎই থেমে যান চার্লস। তার তাণ্ডব থামান শাদাব খান। ফেরার আগে ৪৫ বলে ৮ ছক্কার বিপরীতে ৩ চারে ৭৩ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন তিনি। চালর্সকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে যাওয়া মোহাম্মদ মিঠুন এরপর দলের হাল ধরেন। তবে তাকে সমর্থন জোগাতে পারেননি মোসাদ্দেক হোসেন। আফ্রিদির শিকার হয়ে ফেরেন তিনি।

পরে মিঠুনকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন শেরফান রাদারফোর্ড। শেষদিকে দুজনই ঝড় তোলেন। তাতে প্রত্যাশানুযায়ী সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় সিলেট। শেষ অবধি নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৪ রান তুলতে সক্ষম হয় তারা।

৩১ বলে ৪ ছক্কার বিপরীতে ১ চারে ৪৯ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন মিঠুন। আর ২৮ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৮ রানের হার না মানা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন রাদারফোর্ড। ঢাকার হয়ে আফ্রিদি নেন সর্বোচ্চ ২ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

সিলেট থান্ডার ইনিংস: ১৭৪/৪ (২০ ওভার), ফ্লেচার ০, আব্দুল মজিদ ৮, চার্লস ৭৩, মিথুন ৪৯, মোসাদ্দেক ২, রাদারফোর্ড ৩৮। মেহেদী হাসান ১/৩৩, হাসান মাহমুদ ০/২৯, শাদব খান ১/২৩, শহীদ আফ্রিদি ২/২৬, ওয়াহাব রিয়াজ ০/৩৫, মাশরাফি ০/২৭)।

ঢাকা প্লাটুন ইনিংস: ১৭৫/২ (১৮.৩ ওভার), এনামুল ৩২, তামিম ৬০, মেহেদী হাসান ৫৬, জাকের ২২। সোহাগ গাজী ০/৪৭, সানতোকি ০/১৬, মোসাদ্দেক ১/৩০, ইবাদত ১/২৪, নাজমুল হোসেন মিলন ০/১৭, রাদারফোর্ড ০/২৫, অপু ০/১৬)।

ফল: ৮ উইকেটে জয়ী ঢাকা প্লাটুন।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: মেহেদী হাসান (ঢাকা প্লাটুন)।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে