রাজাকারদের তালিকা যাচাই-বাছাই না করেই প্রকাশ করাটা ভুল ছিল বলে স্বীকার করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সেই ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে তিনি জানিয়েছেন, এবার যে তালিকা হচ্ছে তাতে আর ভুল হবে না।
আজ শুক্রবার টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই সভার আয়োজন করা হয়।
সম্প্রতি রাজাকারের তালিকা প্রকাশের পর তাতে ব্যাপক ভুল ধরা পড়ে। অনেক ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকেও সেই তালিকায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়। তুমুল সমালোচনার মুখে সেই তালিকা প্রত্যাহার করে নেয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রী এজন্য ক্ষমাও চান। আগামী ২৭ মার্চ নতুন তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
রাজাকারের তালিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ভুল হয়েছে বলে রাজাকারের তালিকা হবে না, তা তো নয়। রাজাকারের তালিকা হবেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা নিয়ে আর রাজাকার-আলবদর ও আলশামসের তালিকা প্রকাশ করা হবে না। নিবিড় অনুসন্ধান চালিয়ে উপজেলাভিত্তিক রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
মন্ত্রী জানান, জানুয়ারি মাসে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। ইতিমধ্যে তালিকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন সেই তালিকা আবার যাচাইয়ের কাজ চলছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারিভাবে পরিচয়পত্র দেয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২৬ মার্চের মধ্যেই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ছবিসহ পরিচয়পত্র দেয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, জিয়াউর রহমান রাজাকার, আলবদর ও আলশামসদের পিস কমিটির নেতাদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। আর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিদেশি দূতাবাসে বিভিন্ন বড় বড় পদে পদায়ন করেছিলেন। আমি শ্রদ্ধা জানাতে পারতাম বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে। কিন্তু যখন দেখি গোলাম আযমের সাথে হাত মিলিয়ে এক মঞ্চে বসে একত্রে শেখ হাসিনার সরকারকে পতন ঘটানোর জন্য সভা করেন তখন আর শ্রদ্ধা জানাতে পারি না।
- ফের বিক্ষোভে উত্তাল দিল্লি জামে মসজিদ এলাকা
- অলির মঞ্চে যোগদান বিষয়ে জামায়াতের ব্যাখ্যা চাইবে বিএনপি
মোজাম্মেল বলেন, আমার আরেক বন্ধু শাজাহান সিরাজ মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ৩ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সামনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন। পরবর্তী সময়ে বিএনপি সরকারের আমলে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, তিনি নাকি জিয়াউর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। আমার দুঃখ হয় তিনি পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখিয়ে এ ছবি এখানে কেন। বর্ণচোরা শাজাহান সিরাজরা পঁচাত্তরে রূপ পাল্টে গিয়ে বলেন, জিয়াউর রহমানের ডাকে নাকি স্বাধীনতা করেছে।
অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোশারফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী। এ সময় আরও বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আরা নিপা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বিকম প্রমুখ।