টানা চার হারের পর চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে অধিনায়ক বদলে প্রথম জয়ের দেখা পায় রংপুর রেঞ্জার্স। তবে ঢাকায় ফিরে আবারও নতুন অধিনায়কের অধীনে খেলতে নামে মুস্তাফিজুর রহমান, নাইম শেখরা।
একদিন আগে বাংলাদেশে আসা অজি তারকা শেন ওয়াটসনের নেতৃত্বে অবশ্য লাভ হয়নি রংপুরের, খুলনা টাইগার্সের কাছে হেরেছে ৫২ রানে। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন অধিনায়ক ওয়াটসনও।
ঘোর কুয়াশাচ্ছন্ন কন্ডিশনে টস জিতে ফিল্ডিং নিতে দু’বার ভাবেননি রংপুর অধিনায়ক ওয়াটসন। বোলাররা শুরুতে সাফল্যও এনে দেন। ৪৫ রানে তুলতেই খুলনা টাইগার্স হারায় ৩ উইকেট। লোয়ার মিডল অর্ডারের মেহেদী মিরাজকে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ ওপেন করিয়েও লাভের লাভ কিছু হয়নি খুলনার। আগের ম্যাচে খালি হাতে ফেরার পর আজ করতে পেরেছেন মাত্র ১২ রান। এদিকে টানা ৪ ম্যাচ দুই অঙ্ক ছুঁতে না পারা নাজমুল শান্ত ওপেনিংয়ে ফিরে দেখা পেয়েছেন দুই অঙ্কের।
দলীয় ২৩ রানের মাথায় মেহেদী হাসানকে ফিরিয়ে ২৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর রহমান, পরের বলে টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকতার নজির গড়া রাইলি রুশোকে খালি হাতে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক সম্ভাবনাও জাগান।
এরপর শামসুর রহমান শুভকে ১৩ রানের বেশি করতে দেননি লুইস গ্রেগরি। ৪৫ রানে তিন উইকেট হারানো খুলনাকে টেনে নেন মুশফিকুর রহিম। শান্তকে নিয়ে যোগ করেন ৩৯ রানের জুটি, ২২ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান।
শান্তর বিদায়ের পর টুর্নামেন্টে প্রথম খেলতে নামা নাজিবউল্লাহ জাদরানকে নিয়ে ৫১ বলের জুটিতে যোগ করেন ৮২ রান। ২৬ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় জাদরান ৪১ রান করে ফিরলে ভাঙে জুটি। ততক্ষণে ফিফটির দেখা পেয়ে যান মুশফিকুর রহিম। ৪১ বলে ফিফটিতে পৌঁছানো মুশফিক মুস্তাফিজের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরার আগে খেলেন ৪৮ বলে ৪ চার ২ ছক্কায় ৫৯ রানের ইনিংস।
মুশফিকের বিদায়ের পর খুলনা শেষ পর্যন্ত থামে ৭ উইকেটে ১৮২ রানে। রংপুরের হয়ে মুস্তাফিজ তিনটি ছাড়াও দুটি উইকেট নেন লুইস গ্রেগরি, একটি শিকার মোহাম্মদ নবির।
মিরপুরের আজকের উইকেট বিবেচনায় ১৮৩ রানকে বলা যায় বড় লক্ষ্যই। যদিও কুয়াশার প্রভাবে রাতের ম্যাচে বল করতে কিছুটা কঠিন হয় বলে কিছুটা সম্ভাবনা ছিল। সাথে অস্ট্রেলিয়া থেকে উড়ে আসা ওয়াটসনেও স্বপ্ন দেখেছিল রংপুর ভক্তরা।
কিন্তু খুলনার বোলারদের তোপে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রানের বেশি তুলতে পারেনি রংপুর। পেসার শহিদুল ইসলাম একাই নেন ৪ উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই আসা যাওয়ার মিছিলে ছিল রংপুর রেঞ্জার্স ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে মাত্র ৫ রান করা ওয়াটসনকে ফিরিয়ে শুরুটা করেন রবি ফ্রাইলিঙ্ক। মাঝে ওপেনার নাইম শেখ ৯ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ২০ রান করে কিছুটা লড়াইয়ের ইঙ্গিত দেন। ফিরতি ক্যাচে তাকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি মোহাম্মদ আমির।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট যাওয়ার ভীড়ে লুইস গ্রেগরি খেলেন ২৬ বলে ৩৪ রানের ইনিংস। এছাড়া বলার মত স্কোর করতে পারেনি কেউ, সাদমান ইসলামের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান।
- রওশনের জন্য জাপায় নতুন পদ ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক’, কাদের চেয়ারম্যান
- সন্ত্রাস মোকাবিলায় একজোট হলো ঢাবির ১২ ছাত্রসংগঠন
দলীয় সংগ্রহ ১০০ রানের আগেই ৭ উইকেট হারায় রংপুর, ১০৭ রান তুলতে নেই আরও দুই উইকেট। শেষ উইকেট জুটিতে মুস্তাফিজের ১১বলে ১ চার ২ ছক্কায় ২১ রানের ঝড়ো ইনিংসে রংপুর কেবল হারের ব্যবধানই কমাতে পারে।
৪ ওভারে ২৩ রান খরচায় ৪ শহিদুলের ৪ উইকেটের পাশাপাশি তানভির ইসলামের শিকার দুটি। একটি করে নেন মোহাম্মদ আমির, ফ্রাইলিঙ্ক ও শফিউল ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইগার্স: ১৮২/৭ (২০), শান্ত ৩০, মিরাজ ১২, রুশো ০, শুভ ১৩, মুশফিক ৫৯, নাজিবউল্লাহ ৪১, ফ্রাইলিঙ্ক ৯, শহিদুল ০*, আমির ১*; মুস্তাফিজ ৪-০-২৮-৩, নবি ৪-০-১৬-১, গ্রেগরি ৪-০-৩৬-২।
রংপুর রেঞ্জার্স: ১৩০/৯ (২০), ওয়াটসন ৫, নাইম ২০, দেলপোর্ত ৯, গ্রেগরি ৩৪, রাব্বি ৪, নবি ৭, সাদমান ১৬, জহুরুল ১, সঞ্জিত ৫*, মুগ্ধ ০, মুস্তাফিজ ২১*; আমির ৩-০-১৫-১, ফ্রাইলিঙ্ক ৪-১-২৩-১, শফিউল ২-০-১৪-১, তানভির ৩-০-২৯-২, শহিদুল ৪-০-২৩-৪।
ফলাফল: খুলনা টাইগার্স ৫২ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: শহিদুল ইসলাম (খুলনা টাইগার্স)।