রাজধানীতে এক বছরে ২০১ খুন

ডেস্ক রিপোর্ট

লাশ উদ্ধার
ফাইল ছবি

২০১৯ সালে রাজধানী ঢাকায় ২০১ খুনের ঘটনা ঘটেছে। বছর শুরুর পর ৭ জানুয়ারি থেকে সবশেষ ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব খুনের ঘটনা ঘটে।

বছর শেষে এসে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

universel cardiac hospital

এসব খুনের ঘটনায় সবচেয়ে আলোচিত বুয়েটের আবরাব ফাহাদ হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ড দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবরের শিরোনাম হয়েছে। রাজধানীতে সংঘটিত খুনের ঘটনাগুলোর আলোচিত কয়েকটি তুলে ধরা হলো।

গত ৭ অক্টোবর বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে পুলিশ জানায়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ২১ আসামি কারাগারে।

বছর শুরুর পর ৭ জানুয়ারি রাজধানীর ডেমরা এলাকায় নুসরাত জাহান ও ফারিয়া আক্তার দোলা নামের দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ডেমরা থানায় একটি হত্যা মামলা করে নিহত নুসরাতের বাবা পলাশ। পুলিশ গোলাম মোস্তফা ও তার খালাতো ভাই আজিজ বাওয়ানীকে গ্রেপ্তার করে। ধর্ষণের পর তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পুলিশ এই মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে। মামলাটি বর্তমানে স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

গত ২১ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটরায় যমুনা ব্যাংকের বুথের মধ্যে নিরাপত্তা কর্মী মো. শামীমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে।

গত ২৮ জানুয়ারি মতিঝিল থানার ফকিরাপুল এলাকায় অথরা আক্তার লুসি নামের এক তরুণীল মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন লুসির মা রেনু বেগম। মামলাটির তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে এই মামলার তদন্ত এখনও শেষ করতে পারেনি ডিবি।

১০ ফেব্রুয়ারি ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা পারভীন চৌধুরী নিজ বাসায় খুন হন। নিহতের স্বামী ইসমত কাদির গামা বাদি হয়ে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ গৃহকর্মী রিতা আক্তার ও রেশমা ওরফে রুনার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে। বর্তমানে দুই গৃহকর্মীই জেলে রয়েছেন। মামলাটি বর্তমানে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

২০ জুন পুরান ঢাকার বংশালে কণ্ঠশিল্পী মোহাম্মদ উল্লাহ অভিকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বাদি নিহত অভির বোন তাসনুহা আক্তার বাদী হয়ে বংশাল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পাঁচজন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও পুলিশ এই মামলায় এখনও পর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারে নাই। এখনও শেষ হয়নি এই মামলার তদন্ত।

গত ১ নভেম্বর ধানমন্ডিতে আফরোজা বেগম ও গৃহকর্মী দিতি আক্তার নামের দুই নারী খুন হন। এ ঘটনায় নিহত আফরোজা বেগমের মেয়ে দিলরুবা সুলতানা বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত করছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ মামলার তদন্তও শেষ করতে পারেনি পুলিশ।

গত ৪ ডিসেম্বর মিরপুরে রহিমা বেগম ও সুমি আক্তার নামের দুই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে জানা যায়, টাকা ভাগাভাগীর কারণেই তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এই মামলায় রমজান ও ইউসুফ নামের দুজনকে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে। এই মামলার তদন্ত শেষ হয়নি।

একইদিন রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী থেকে রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা নামের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। যদিও তার মৃত্যুর কারণ এখনও উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। রুম্পার বাবার করা মামলায় কথিত ছেলে বন্ধু আবদুর রহমান সৈকত গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। এই মামলার তদন্তও শেষ করতে পারেনি পুলিশ।

১১ ডিসেম্বর বনানী এলাকায় গাওজিয়াং হুই নামের এক চীনা নাগরিকের লাশ উদ্ধার করা হয়। জাহাং শোহাং নামের এক আত্মীয় বাদি হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় আবদুর রউফ ও এনামুল হক নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। টাকার লোভেই তাকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ জানায়।

গত ১২ ডিসেম্বর ফকিরাপুলে শহিদুল ইসলাম ও মর্জিনা বেগম নামের দম্পতির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মর্জিনার বাবা নবির আহমেদ বাদি হয়ে মতিঝিল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে জানা যায়, স্বামী শহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী মর্জিনাকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছেন।

গত ২০ ডিসেম্বর রাজধানীর মুগদা এলাকায় মাহিন রহমান নামের এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা রোজিনা বেগম বাদি হয়ে মুগদা থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

সবশেষ গত ২৫ ডিসেম্বর মহাখালী এলাকায় নিজ বাসায় খুন হন ব্যবসায়ী তোবারক হোসেন। দোকান থেকে তাড়িয়ে দেয়ায় তার কেয়ারটেকারসহ পাঁচজন মিলে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে