শুরু হল ইংরেজি নতুন বর্ষ ২০২০ সালের প্রথম দিন। আনন্দ-বেদনা, সাফল্য-ব্যর্থতা, আশা-নিরাশা, প্রাপ্তি-প্রবঞ্চনার হিসেব-নিকাশ পেছনে ফেলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই। চিরসংগ্রামী, লড়াকু ও আশাবাদী মানুষের প্রত্যাশা সব ধরনের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনবে অনাবিল আনন্দ। নতুন আশার আলো প্লাবিত করবে দিক-দিগন্ত। নতুনের প্রতি সবসময়ই মানুষের থাকে বিশেষ আগ্রহ ও উদ্দীপনা। নতুনের মধ্যে নিহিত থাকে অমিত সম্ভাবনা। সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপায়ন করার সুযোগ করে দিতে এলো নতুন বছর।
আমাদের সংস্কৃতিতে পহেলা বৈশাখের পাশে ‘নিউ ইয়ার্স ডে’ জোরালো হয়ে উঠছে। যদিও পহেলা বৈশাখ এবং নিউ ইয়ার্স ডে এই দুইয়ের শ্রেণিচরিত্র ভিন্ন ভিন্ন তবু যারা ‘নিউ ইয়ার’ উদযাপন করেন, তাদের কেউ কেউ পহেলা বৈশাখও পালন করেন। সংখ্যাটি হয়তো ক্রমান্বয়ে কমতেই থাকবে। কারণ ভাগ হয়ে যাচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি। তবে পহেলা বৈশাখের সঙ্গে ‘নিউ ইয়ার্স ডে’র মৌলিক পার্থক্য, পহেলা বৈশাখ রাতের নয়, দিনের।
আমাদের সংস্কৃতি ভাগ হয়ে যাচ্ছে। এই বিভাজন চলছে এবং চলবে। বাঙালিত্ব হারানো নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যেই আজ আর আতঙ্ক নেই। কারণ তাদের সমস্যা বাঙালিত্ব বাঁচানোর নয়। সমস্যা প্রাণ বাঁচানোর। ধনী হলে মানুষ আর বাঙালি থাকে না। আন্তর্জাতিক হয়। তখন সে ‘নিউ ইয়ার্স ডে’ উদযাপন করে। ভিন্নভাবে এবং রাত্রি বেলায়। তবুও আমরা আশা রাখি- পুরনো বছরের ভুলগুলো শুধরে সমস্ত ইতিহাস থেকে ভালো ভালো শিক্ষা গ্রহণ এবং অতীতের সফলতা-ব্যর্থতাকে পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সামনের দিকে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যাব।
ইংরেজি নববর্ষ ২০২০ নানা কারণে আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা জাতি নতুন বছরের ১৭ মার্চ থেকে বছরব্যাপী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবে । এ লক্ষ্যে আমরা ২০২০ সালকে ‘মুজিববর্ষ’ নামকরণ করেছি। আমাদের বিশ্বাস বছরব্যাপী এ আয়োজন আমাদের সবার মধ্যে জাতির জনকের চিন্তা চেতনাকে প্রসারিত করবে।
সবাইকে জানাই ইংরেজি নতুন বছরের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। শুভ হোক ইংরেজি নববর্ষ। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথায়, ‘বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও,/ ক্ষমা করো আজিকার মতো,/পুরাতন বর্ষের সাথে/পুরাতন অপরাধ যত।’ আমাদেরও প্রত্যাশা পুরনো বছরের যত ব্যর্থতা-বেদনা, হতাশা-নিরাশা এমনি করে ক্ষয় হোক আবর্ত আঘাতে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।