র‍্যাগিংয়ের দায়ে জাবি’র ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি

র‍্যাগিংয়ের দায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ১১ শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও ‘অসত্য ও ভুল তথ্য’ পরিবেশনের জন্য আরও ১৬ শিক্ষার্থীকে সতর্ক করা হয়েছে।

গত ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

আজ বৃহস্পতিবার তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান।

ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদনের আলোকে এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।

বহিষ্কৃতরা হলেন- শহীদ সালাম-বরকত হলের হারুন-অর-রশিদ ও মুহাম্মদ মাহাবুবুল আলম, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের এনামুল হক তামিম, মওলানা ভাসানী হলের মো. রাইসুল ইসলাম রাজু, তাওসিফ আব্দুল্লাহ, সালগ্না রেমা, জাকির হোসেন জীবন ও মো. মাহবুবুল আলম এবং বেগম খালেদা জিয়া হলের সারা বিনতে সালাহ, সায়মা লিমা ও ফাবিহা বিনতে হক।

জানা যায়, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৪৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রথম বর্ষের (৪৮ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের র‍্যাগ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তাদের সামনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ‘র‍্যাগিংয়ের ঘটনার’ মৌখিক জবানবন্দি দেন। সেই জবানবন্দি মুঠোফোনে রেকর্ড করা হয়।

পরদিন সন্ধ্যায় মৌখিকভাবে দেয়া জবানবন্দি ‘অতিরঞ্জিত’ ছিল উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ও প্রক্টরের কাছে লিখিতভাবে জবানবন্দি প্রত্যাহার করে নেন প্রথম বর্ষের ১৯ শিক্ষার্থী।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে মুঠোফোনে রেকর্ড করা জবানবন্দি শোনান। পরে ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন উপাচার্য। গঠিত ওই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৯ ডিসেম্বরের সিন্ডিকেট সভায় বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত আসে। বহিষ্কৃতরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী।

এদিকে আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ২য় পর্ব চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানা যায়। এ অবস্থায় বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসায় তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে গেল বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন সহপাঠীরা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে