খুলনাকে হারিয়ে প্লে-অফে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইমরুল কায়েস
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

জয়রথ ছুটছেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। আবারও দুর্দান্ত জয় তুলে নিল বন্দরনগরীর দলটি। খুলনা টাইগার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে তারা। এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে বন্দরনগরীর দলটি। ১০ ম্যাচে তাদের জয় ৭টি, হার ৩টি। এতেই প্রথম দল হিসাবে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আর ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে আছে খুলনা।

এদিন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে খুলনার দেয়া ১২২ রানের টার্গেটে জবাব দিতে নেমে চট্টগ্রামকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন লেন্ডল সিমন্স ও জুনায়েদ সিদ্দিকী। মারকাটারি ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৬৯ রান তোলেন তারা। এতেই মূলত জয়ের ভিত তৈরি হয়ে যায় তাদের। ২৮ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ রান করে সিমন্স ফিরলেও থেকে যান জুনায়েদ। ইমরুল কায়েসকে নিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে যান তিনি।

ফিফটির পথে ছিলেন জুনায়েদ। তবে আচমকা থমকে যান বাঁহাতি ব্যাটার। মিরাজের কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফেরেন এ ওপেনার। এর আগে ৩৯ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৮ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর ফ্রাইলিংকের শিকার হয়ে তৎক্ষণাৎ ফিরে আসেন আসেলা গুনারত্নে। খানিক বাদে একই বোলাররের বলি হন চ্যাডউইক ওয়ালটন। তবে জয় তুলে নিতে বেগ পেতে হয়নি তাদের।

একপ্রান্ত আগলে রেখে জয় নিশ্চিত করেন ইমরুল কায়েস। নুরুল হাসানকে নিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করেন। ২৭ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩০ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন ইমরুল। আর ৬ রানে অপরাজিত থাকেন নুরুল। ১১ বল হাতে রেখেই বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন তারা।

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সিলেট পর্বে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। দলটির নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ভুগছেন। ফলে টস করতে নামেন ইমরুল কায়েস।তাতে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেন তিনি। তার সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক প্রমাণ করেন এবারের চমক মেহেদী হাসান রানা।শুরুতেই মেহেদী হাসান মিরাজ ও অভিজ্ঞ হাশিম আমলাকে ফিরিয়ে দেন তিনি।

এরপর শামসুর রহমানকে দ্রুত তুলে নেন কেসরিক উইলিয়ামস। মুহূর্তেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে খুলনা। বিপর্যয়ের মুখে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে দলের হাল ধরেন রাইলি রুশো। ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। তাতে রানের চাকাও ভালোমতো ঘুরছিল। কিন্তু হঠাৎ থেমে যান মুশফিক। রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২৯ রানে জিয়াউর রহমানের বলে বোল্ড হন তিনি ।

পরে রবি ফ্রাইলিংককে নিয়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন রুশো। ভালোই খেলছিলেন দুই প্রোটিয়া। চট্টগ্রাম বোলারদের শাসাচ্ছিলেন রুশো। ফিফটির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময়ে পথচ্যুত হন বাঁহাতি ব্যাটার। উইলিয়ামসের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে যান তিনি। ফেরার আগে ৪০ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৪৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন রুশো।

এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে খুলনা। পরক্ষণেই উইলিয়ামসের বলে বিদায় নেন আমের ইয়ামিন। খানিক পর রুবেল হোসেনের বলে ফেরেন আলাউদ্দিন বাবু। রুশোর সঙ্গে জোট ভেঙে গেলে টিকতে পারেননি ফ্রাইলিংকও। রানার শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দেন তানভীর ইসলাম। তাকে ফিনিশ করেন রুবেল।

শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রানআউটে কাটা পড়েন আলিস আল ইসলাম। শেষ পর্যন্ত ১৯.৫ ওভারে ১২১ রানে অলআউট হয় দক্ষিণের দলটি। তাদের এ রানে গুটিয়ে দেয়ার নেপথ্য কারিগর রানা-রুবেল। আগুনঝড়া বোলিং করেন তারা। প্রত্যেকে শিকার করেন ৩টি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফল: ৬ উইকেটে জয়ী চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

খুলনা টাইগার্স ইনিংস: ১২১ (১৯.৫ ওভার)

(মিরাজ ৪, আমলা ৮, রুশো ৪৮, শামসুর ০, মুশফিক ২৯, ফ্রাইলিঙ্ক ১৭, ইয়ামিন ০, বাবু ১, শফিউল ৩*, তানভীর ৩, আল ইসলাম ১; রুবেল ৩/১৭, নাসুম ০/১৮, রানা ৩/২৯, কেজরিক ২/২১, জিয়াউর রহমান ১/২২, গুনারত্নে ০/১৪)।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ইনিংস: ১২৪/৪ (১৮.১ ওভার)

(সিমন্স ৩৬, জুনায়েদ ৩৮, ইমরুল ৩০, গুনারত্নে ০, ওয়ালটন ৭, সোহান ৬; ইয়ামিন ০/২৯, ফ্রাইলিঙ্ক ২/২০, শফিউল ০/২২, আল-ইসলাম ১/২৭, বাবু ০/৮, মিরাজ ১/১০, রুশো ০/৭)।

ম্যাচ সেরা: মেহেদী হাসান রানা (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে