ইসি ইভিএমে ডিজিটাল কারচুপির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : ফখরুল

মত ও পথ প্রতিবেদক

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন এর আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ডিজিটাল কারচুপির এক নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ দলটির। ইভিএমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

আজ রোববার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান। এ সময় দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইভিএমের মতো নিঃশব্দ নির্বাচনী কারচুপি পদ্ধতি কিছুতেই কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে না। অতএব বিএনপি মনে করে, ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত দলবাজ নির্বাচন কমিশন ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ভবিষ্যতে এদেশের মানুষের ভোটাধিকার স্থায়ীভাবে কেড়ে নেওয়ার এক মহা ষড়যন্ত্র ও দূরভিসন্ধি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নূরুল হুদা কমিশন আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিজিটাল কারচুপির এক নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। যা বাংলাদেশের বিধ্বস্ত নির্বাচনী ব্যবস্থার কফিনে সর্বশেষ পেরেক বলে ইতিহাসে গণ্য হবে। বাংলাদেশে এরআগে ইভিএম ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় তা প্রমাণিত।

ফখরুল বলেন, ইভিএম ব্যবহার নিশ্চয়ই ভোটারদের জন্য সহজ ও বোধগম্য কোনো পদ্ধতি নয়। আমাদের সহজ-সরল ভোটাররা ইভিএমের মতো জটিল প্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত নয় এবং সেভাবে যথাযথ প্রশিক্ষণও পায়নি। এক কথায় ইভিএম ভোটারবান্ধব কোনো পদ্ধতি নয়। সেই তুলনায় প্রচলিত কাগজের ব্যালেট ব্যবহারেই তারা অধিকতর স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কাগজের ব্যালেটে তারা তাদের ইচ্ছেমতো মার্কায় সিল মেরে সন্তুষ্ট হতে পারে যে, যাকে ভোট দিতে চান তাকেই মূল্যবান ভোটটি দিতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, ইভিএমে ভোটার অডিট ট্রেইল না থাকায় বুঝতেই পারবেন না তিনি যাকে ভোট দিতে চেয়েছেন ভোটটি তিনিই পেলেন কি না। আর এখানেই যত শুভংকরের ফাঁকি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, নির্বাচন হচ্ছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার সর্বোৎকৃষ্ট পদ্ধতি। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের মালিক জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ এবং সহজতর কর্মকৌশল ও পরিবেশে ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ। মূলত জনগণের অধিকার নিশ্চিতের এই গুরুদায়িত্ব যথাযথ পালনেই নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। জনগণ যাতে কমিশনের যেকোনো সিদ্ধান্তকে তাদের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা থেকে গ্রহণ করে।

দলের অবস্থানের কথা জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমরা অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বর্তমান দলবাজ নির্বাচন কমিশনের প্রতি এদেশের মানুষের ন্যূনতম আস্থা নেই। জনগণ ‘ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)’ পদ্ধতিতে তার ভোট প্রয়োগ করবে একতরফাভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনো নৈতিক অধিকার বর্তমান নির্বাচন কমিশনের নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে