যুবলীগের কথিত সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ১৯৪ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন।
ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামি জি কে শামীমের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া গুলশান থানার ২৯(৯)১৯ নম্বরের মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় সিআইডি এ আবেদন করেছিল।
আবেদনে বলা হয়, এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ও অন্যান্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে নিজ নামে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়-ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজ, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল, গরুর হাট-বাজার নিয়ন্ত্রণসহ চাাঁদাবাজি করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ বৈভবের মালিক হন। দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল, গরুর হাট-বাজারে চাঁদাবাজি করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চাঁদাবাজির নামে বিপুল অর্থ উপার্জন করে দেশে ও বিদেশে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরসহ নিজের ব্যাংক হিসাবে বিপুল টাকা গচ্ছিত রাখেন। আসামি এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম র্যাবের অভিযানে এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার ইউ এস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুর ডলার, ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার ১০ টি এফডিআর, ৩২টি ব্যাংক একাউন্ট ও চেক বই সহ গ্রেপ্তার হয়।
আবেদনে আরো বলা হয়, মামলার তদন্তের আসামিদের নামে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ টাকা পয়সার লেনদেন পরিলক্ষিত হয়। মামলার তদন্তকালে জানা যায়, এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ও তার পরিবার বাংলাদেশ থেকে অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে মজুদ রেখেছে। এছাড়াও আসামি যে কোনো সময় মজুদকৃত অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে পারে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অপরাধলব্ধ আয় সংক্রান্ত ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। আসামির অপরাধলব্ধ আয় অবরুদ্ধ না হলে ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত অর্থ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে আইনের উদ্দেশ্যে ব্যাহত হতে পারে। মামলার তদন্তকালে জি কে শামীমের ব্যাংক হিসাব ও এফডিআর সমূহে গচ্ছিত অর্থেও তথ্য পাওয়া যায়। ব্যাংক হিসাব ও এফডিআর সমূহ অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা না হলে আসামি যেকোনো সময় হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে পারে বা হিসাবসমূহের অর্থ বিদেশেও প্রেরণ করতে পারে। যা পরবর্তীতে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হয় না। জানা গেছে, ওই হিসাবগুলোতে কয়েক শ কোটি টাকা রয়েছে।
জি কে শামীমকে গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে নিজ কার্যালয় থেকে আটকের সময় নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুর ডলার, জি কে শামীমের মায়ের নামে ট্রাস্ট ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখায় ২৫ কোটি টাকার করে চারটি এবং ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার একটি ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক মহাখালী শাখায় ১০ কোটি টাকা করে চারটি এফডিআর, শামীমের নামে ট্রাস্ট ব্যাংক কেরানীগঞ্জ শাখায় ২৫ কোটি টাকার একটি এফডিআর জব্দ করা হয়।