সময় এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার : রাষ্ট্রপতি

সিলেট প্রতিনিধি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ফাইল ছবি

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রই এখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নিজেদের শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলছে। তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর নতুন এই বিশ্ব ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত যেকোনো অসামর্থ্যই দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকেও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে নিরন্তর গবেষণা। নিত্য নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও তার প্রসারের ওপরই নির্ভর করে দেশের সমৃদ্ধি।

universel cardiac hospital

আজ বুধবার বিকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তনে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর বুকে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নশীল একটি দেশ। দারিদ্র নিরসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে বহির্বিশ্বে দেশটি এখন রোল মডেল। বিশ্বে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের ওপরে। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, ২০২৪ সাল নাগাদ এই হার হবে ১০ শতাংশের উপরে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সময় এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার। সময় এখন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার, পথ চলবার। বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ও অগ্রযাত্রায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের মানুষের অবদান খুবই প্রশংসনীয়। এ দেশের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, পরিশ্রমী, উদ্যমী, লড়াকু ও সংবেদনশীল জনগণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সফল হবে ইনশাল্লাহ।

গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, যেকোনো দেশের উন্নয়ন ও ইতিবাচক পরিবর্তনে তরুণ সমাজ-ই মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে থাকে। আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। সুতরাং আজ তোমরা যারা গ্র্যাজুয়েট হলে, আমার সামনে এই যে তরুণ, তোমরা এক-একটি আলোর প্রদীপ, তোমাদের সকলকে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আসতে হবে। নিতে হবে দেশ ও জাতির দায়ভার। আমি মনে করি তোমাদের মেধা ও শ্রমেই গড়ে উঠবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কঠোর জ্ঞানতপস্যা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে তোমরা ডিগ্রি অর্জন করেছ। তোমরা ভালো করেই জানো তোমাদের বিদ্যালাভ ও সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পেছনে যারা শক্তি, সাহস ও অর্থ যুগিয়েছেন তারা হচ্ছেন এ দেশের জনগণ। তাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি জীবনব্যাপী তোমাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা জাতি প্রত্যাশা করে।

মো. আবদুল হামিদ বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় তরুণদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। তাই সরকারি চাকরির বা অন্য চাকরির পেছনে মনোনিবেশ না করে উদ্যোক্তা হওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

এর আগে অনুষ্ঠানস্থলে শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান, পিএইচডি প্রদান ও স্বর্ণপদক প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি।

এবারের সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০০০-০১ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ৬ হাজার ৭৫০ জন গ্র্যাজুয়েটের ডিগ্রি ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি। তাদের মধ্যে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ২০ জন শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম।

বিকাল সাড়ে ৪টার পর রাষ্ট্রপতি সমাবর্তনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শাবি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম।

এ সময় আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে